রাজশাহীর বাঘায় অকাল মৃত্যু মোবাশ্বিরা ইসলাম মোহনার । রোববার (১২ মে) প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল শুনার পর থেকে বাবা-মা’র কান্না থামছেনা। প্রকাশিত ফলাফল পেয়ে অন্য শিক্ষার্থীরা আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে উঠলেও মোবাশ্বিরা ইসলাম মোহনার পরিবারে পরিনত হয় বিষাদাগারে।
মোবাশ্বিরা ইসলাম মোহনা উপজেলার নওটিকা গ্রামের বাসিন্দা পীরগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মহিরুল ইসলামের মেয়ে এবং নওটিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ।
জানা গেছে, মোবাশ্বিরা ইসলাম মোহনা নওটিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। প্রকাশিত ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় সে। এ খবর শুনার পর থেকে বাব-মা’র শুরু হয় কান্নার রোল যেন থামছেনা। সোমবার (১৩ মে) দুপুরে এমনটাই দেখা গেছে তার বাড়িতে ।
পরীক্ষা দেওয়ার কয়েকদিন পর মোবাশ্বিরা জিহবাবর নিচে ছোট্ট একটি সিস্ট অস্ত্রোপচার করার জন্য রাজশাহী মহানগরের লক্ষীপুর এরাকায় আল আমিন নামের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২০ মার্চ সন্ধ্যায় তার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। এরপর থেকে তার শারীরিক অবস্থা অবনতি দেখা দেয়। এক পর্যায়ে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় (ফল প্রকাশের এক মাস ২২ দিন আগে) ভোরে মারা যায়। ২১ মার্চ বিকালে জানাজা শেষে নওটিকা গ্রামে কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
মোবাশ্বিরার মা দিলারা ইসলাম বলেন, মেয়ে রাজশাহী কলেজ পড়া ইচ্ছে ছিল । মেয়ে ফলাফলে ১ হাজার ২০০-এর বেশিই নম্বর পেল। তার আর কলেজে ভর্তি হওয়া হলো না।
নওটিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শরিফা বেগম বলেন, মোবাশ্বিরার অত্যন্ত মেধামী ছাত্রী ছিল। সে অকালে ইহলোক ছেড়ে চলে যাবে কখনো ভাবতে পারিনি। তার ফল দেখে নিজে অসস্তি লাগছিল।
মোবাশ্বিরার বাবা মহিরুল ইসলাম বলেন, অস্ত্রোপচার করতে যাওয়ার সময় রাজশাহী কলেজ দেখে মাকে বলেছিল, ‘আমি রাজশাহী কলেজে ভর্তি হব।’ মাবাশ্বিরা আমাকে আরো বলেছিল ফলাফলে যে নম্বর থাকবে তাতে রাজশাহী কলেজে ভর্তি হতে পারবো ইনাশাল্লাহ। অপারেশনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তার জিহবার নিচে ছোট্ট একটি সিস্ট অস্ত্রোপচারে মোবাশ্বিরার মৃত্যু হয়।