• ঢাকা, বাংলাদেশ শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:১০ পূর্বাহ্ন
নোটিশ
রাজশাহীতে আমরাই প্রথম পূর্ণঙ্গ ই-পেপারে। ভিজিট করুন epaper.rajshahisangbad.com

অনবদ্য পেলে: ১৫ বছরে অভিষেক থেকে হাজার গোল

রিপোর্টার নাম:
সর্বশেষ: শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২

অনবদ্য পেলে: ১৫ বছরে অভিষেক থেকে হাজার গোল

রাজশাহী সংবাদ ডেস্ক
১৯৬৯ সালের ১৯ নভেম্বর সান্তোস ও ভাস্কো দা গামার সমর্থকরা ১০০০তম গোলের জন্য দাঁড়িয়ে সম্মান জানিয়েছিল পেলেকে। যখন পেলে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তার বয়স তখনও ৩০ পার হয়নি। ফুটবল সম্রাট খ্যাত পেলে চলে গেলেও রয়ে গেছে ফুটবল মাঠে তার অসাধারণ সব কীর্তি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ভক্তদের অসংখ্য গোল ও শিরোপা উপহার দেয়ার পাশাপাশি দিয়েছেন স্মরণীয় দারুণ কিছু মুহূর্ত। নিউজবাংলা
পেলের পেশাদার ফুটবলে অভিষেক হয় ১৯৫৬ সালে। মাত্র ১৫ বছর বয়সে কিংবদন্তি এ ফরোয়ার্ড ব্রাজিলীয় ক্লাব সান্তোসের হয়ে খেলা শুরু করেন। করিন্থিয়ানস সান্তো আন্দ্রে-এর বিপক্ষে ৭-১ গোলের জয়ের ম্যাচে গোলের দেখা পেয়েছিলেন তিনি। পরের বছর জুলাই মাসে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক হয় পেলের। আর সে ম্যাচেও দারুণ একটি গোল করে ফুটবল বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেন ফুটবলের রাজা। কৈশোরে বড় বার্তা দিয়ে মারাকানায় ব্রাজিলের ২-১ গোলে জয়ের পথে লক্ষ্যভেদ করেছিলেন ‘ব্ল্যাক পার্ল’ খ্যাত এই ফুটবলার।
একজন সুপারস্টারের জন্ম
পেলে বিশ্ব মঞ্চে নিজেকে চেনান সুইডেনে অনুষ্ঠিত ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপে। নিজেকে চেনাতে অবশ্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার-ফাইনালের ম্যাচ পর্যন্ত। ওয়েলসের বিপক্ষে ম্যাচে ১-০ গোলের জয় এনে দেন সেলেকাওদের। সেমিফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে ম্যাচে হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়ে যান পেলে। আর সেই বছর বিশ্ব মঞ্চের ফাইনালে সুইডেনকে ৫-২ গোলে উড়িয়ে দেয়ার ম্যাচে প্রথম গোলটি করেছিলেন তিনি। যা এখনও সর্বকালের সেরা গোলের একটি হিসেবে বিবেচিত হয়। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এ তারকাকে।

মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়ন
১৯৬২ সালে ক্লাব পর্যায়ে সান্তোসকে মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়ন করতে দারুণ ভূমিকা রাখেন সদ্যঃপ্রয়াত এ কিংবদন্তি। সেবার কোপা লিবার্তাদোরেসে উরুগুয়ের ক্লাব পেনিয়ারোলের বিপক্ষে দুই লেগ মিলিয়ে ম্যাচ যখন সমতায়, তখন নিরপেক্ষ ভেন্যু এস্তাদিও মনুমেন্তালের প্লে অফে পেলে সান্তোসকে জয় এনে দেন। সে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে পেলের গেম প্লে ফুটবল ইতিহাসের অংশ হয়ে রয়েছে। এ জয়ের ফলে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আমেরিকান ট্রফি জেতে সান্তোস।
বিশ্বকাপে অমরত্ব
১৯৫৮ সালে বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক পেলে, তবে ১৯৬২ সালে চোটের কারণে নায়ক হতে পারেননি তিনি। সেই হতাশা কাটিয়ে ১৯৭০ সালে ব্রাজিলের হয়ে তৃতীয় বিশ্বকাপ জিতে নেন এ কিংবদন্তি। যার মধ্য দিয়ে ফুটবল সিংহাসনের রাজার জায়গা দখল করে নেন তিনি। এমনকি ডিয়েগো ম্যারাডোনা উত্থানের আগ পর্যন্ত পেলের ধারেকাছেও যেতে পারেনি কেউ। সে সময়ে কোনো ব্যালন ডরের পুরস্কার না থাকায় তিনি কোনো ব্যালন ডর পাননি। তবে ২০১৪ সালে পেলেকে সম্মানসূচক ব্যালন ডর দেয়া হয়। তার ধারাবাহিক পারফরম্যান্স বিবেচনা করলে সে সময়ে পেতে পারতেন বেশ কয়েকটি ব্যালন ডর। কেননা ১৯৫৭, ১৯৫৮, ১৯৫৯, ১৯৬০, ১৯৬১, ১৯৬২, ১৯৬৩, ১৯৬৪, ১৯৬৫, ১৯৬৯ এবং ১৯৭৩ সময় ক্যাম্পিওনাতো পুলিস্তার সেরা গোলদাতা ছিলেন এই পেলে।
পেলের যত রেকর্ড
ফুটবলের তুমুল জনপ্রিয়তার অনেকটাই ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলের অবদান। ৮২ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে ওপারে পাড়ি দিলেন ফুটবলের এই রাজা। সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পেলে। নিউজবাংলা
ফুটবলের এই কিংবদন্তির যতো রেকর্ড করেছেন তা তুলে ধরা হলো-
১) কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় হিসেবে ফুটবল বিশ্বকাপ জিতেছিলেন পেলে। ১৯৫৮ সালে প্রথম বিশ্বকাপ জিতেছিলেন ফুটবল সম্রাট। সুইডেনকে ফাইনালে ৫-২ গোলে হারিয়েছিল ব্রাজিল। পেলে নিজেও করেছিলেন দুটি গোল। সেইসময় তাঁর বয়স ছিল ১৭ বছর ২৪৯ দিন। ২) ব্রাজিলের হয়ে তিনবার বিশ্বকাপ জিতেছিলেন পেলে। ১৯৫৮ সাল, ১৯৬২ সাল এবং ১৯৭০ সাল। বিশ্বের আর কোনও খেলোয়াড়ের এমন রেকর্ড নেই। ১৯৫৮ সাল এবং ১৯৭০ সালের ফাইনালে গোলও করেছিলেন পেলে। ৩) ফিফার ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ১,৩৬৬ টি ম্যাচে ১,২৮১ টি গোল করেছিলেন পেলে। অর্থাৎ প্রতি ম্যাচে গোলের হার ছিল ০.৯৪। তবে কয়েকটি গোল এসেছিল মিলিটারি সার্ভিস বা ফ্রেন্ডলিতেও। অফিসিয়াল টুর্নামেন্টে পেলের গোলের সংখ্যা ছিল ৭৫৭ – ৮১২টি ম্যাচে। ৪) বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার রেকর্ডও তৈরি করেছিলেন পেলে। ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপে ওয়েলসের বিরুদ্ধে গোল করেছিলেন। সেইসময় তাঁর বয়স ছিল ১৭ বছর ২৩৯ দিন। ওই গোলের সুবাদেই ম্যাচ জিতেছিল ব্রাজিল। ৫) বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিকেরও নজির গড়েছিলেন পেলে। ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেছিলেন ‘ব্ল্যাক পার্ল’। সেইসময় তাঁর বয়স ছিল ১৭ বছর ২৪৪ দিন।


আরো খবর