আত্রাই প্রতিনিধি:
উত্তর জনপদের শষ্য ভান্ডার খ্যাত জেলা নওগাঁর আত্রাই উপজেলার গ্রাম গুলোর গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে গ্রীষ্ম মৌসুমের বেশ জনপ্রিয় পুষ্টিগুণ সম্পন্ন রসালো জাতীয় ফল কাঁঠাল। যদিও পুরো পাকা পুক্ত কাঠাল হওয়ার সময় বাঁকী রয়েছে প্রায় আরো ২ মাস।
প্রবাদ আছে ‘গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল’- জ্যৈষ্ঠ মাসে এ কথাটি আর কথার কথা থাকে না। গাছে কাঁঠাল দেখলে এ কথা সবাই বলতেই পারে। বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি এলাকার গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে রসালো ফল কাঁঠাল। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাড়ির পাশে, রাস্তার ধারে, জঙ্গলের ভেতরে থাকা গাছে ধরেছে প্রচুর পরিমানে কাঁঠাল। গাছের গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত শোভা পাচ্ছে সর্বোচ্চ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই ফল।
খাদ্য শষ্য ভান্ডার হিসেবে নওগাঁ জেলা বিখ্যাত হলেও এখানকার মানুষের অতি প্রিয় ফল ও তরকারি হিসেবে কাঁঠাল যুগ যুগ ধরে কদর পেয়ে আসছে। কাঁঠালের বিচি এখানকার মানুষের একটি ঐতিহ্যপূর্ণ তরকারি। বিশেষ করে কাঠালের বিচ দিয়ে শুটকি ভর্তা অত্যন্ত প্রিয় সকলের। বিভিন্ন ধরনের শাক ও কাঁঠালের বিচির সমন্বয়ে রান্না করা তরকারি এখানকার মানুষ তৃপ্তির সঙ্গে ভাত খেতে পারেন। তাছাড়া গবাদিপশুর জন্যও কাঁঠালের ছাল উন্নতমানের গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এক প্রকারের সবুজ রঙের সুমিষ্ট গ্রীষ্মকালীন ফল।
এটি বাংলাদেশের জাতীয় ফল হিসাবে সরকারীভাবে নির্ধারিত। বাংলাদেশের সর্বত্র কাঁঠাল গাছ পরিদৃষ্ট হয়। কাঁঠাল গাছের কাঠ আসবাবপত্র তৈরির জন্য সমাদৃত। কাঁঠাল পাতা বিভিন্ন প্রাণীর পছন্দের খাদ্য। তুলনামূলকভাবে বিশালাকার এই ফলের বহির্ভাগ পুরু এবং কান্টকাকীর্ণ, অন্যদিকে অন্তরভাগে একটি কান্ড ঘিরে থাকে অসংখ্য রসালো কোয়া। কাঁঠালের বৃহদাকার বীজ কোয়ার অভ্যন্তরভাগে অবস্থিত।
এ বিষয়ে উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের বাগান মালিক মো. ওয়াজেদ আলী প্রামানিক লিটন বলেন, কাঁঠাল আমার একটি প্রিয় ফল। এটি অত্যধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল। কাঁঠালের কোনো অংশই পরিত্যক্ত থাকে না। কাঁঠাল যেমন জনপ্রিয়, কাঁঠালের বিচি ও খুব জনপ্রিয় খাবার। বিভিন্ন সবজির সাথে কাঁঠালের বিচি মিশিয়ে ছোট মাছ দিয়ে রান্না করা তরকারি, শুটকি মাছের সাথে কাঁঠালের বিচি আর ডাঁটার তরকারি, কাঁঠালের বিচি ভর্তা এ রকম অসাধারণ সব স্বাদের খাবার তৈরিতে কাঁঠাল বিচি আলুর বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা হয়। কাঁঠালের কদরও বহুগুণের এমন কথা জানালেন কাঁঠালপ্রেমি প্রবীণ ব্যক্তিরাও। বহুগুণ সমৃদ্ধ এ কাঁঠাল এখানকার হাট-বাজারে এখনও উঠতে শুরু করেনি। তবে জ্যৈষ্ঠের শেষ ও আষাঢ় মাসের শুরু থেকে এখানকার হাট-বাজারে কাঁঠাল কেনাবেচা শুরু হবে এমনটি কাঁঠাল ব্যবসায়ীদের ধারণা।
এ ব্যাপারে উপজেলার ভবানীপুর ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান বলেন, কাঁঠাল কাঁচা ও পাকা দুই অবস্থাতেই সমান জনপ্রিয়। এ বছর আবহাওয়া অনুক’লে থাকায় কাঁঠালের ভালো ফলন হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাপস কুমার রায় বলেন, এ উপজেলায় তেমন একটা কাাঁঠালের বাগান নেই তবে দিন দিন বাড়েই চলেছে। তিনি আরো বলেন গত বছরের তুলনায় এ বছর উপজেলায় কাঁঠাল ভালো হয়েছে। দিন দিন উপজেলার মানুষের মাঝে কাঁঠালের চারা রোপনের আগ্রহ বাড়ছে।