আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আইনি বাধা থাকার পর এবং দল থেকে বারবার সতর্ক করার পরও দলের অনেক এমপি-মন্ত্রী তাদের ছেলে, ভাই, আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের প্রার্থী করছেন। নিজস্ব প্রার্থীর পক্ষে তারা প্রভাব খাটানো বা নির্বাচনে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করবেন বলে দলের স্থানীয় নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের আশঙ্কা। আর এ হস্তক্ষেপ থেকেই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, সংঘাত ও সংঘর্ষের শঙ্কা দেখা দিচ্ছে।
দেশের ৪৮১টি উপজেলায় চার ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট আগামী ৮ মে। দ্বিতীয় ধাপে ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপে ভোট ৫ জুন। স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ স্তর এ উপজেলা পরি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও দলের এমপি-মন্ত্রীদের অনেকে পদটি নিজেরদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাচ্ছেন বলে জানা যাচ্ছে। উপজেলাকে হাতে রাখতে নিজের লোক বা নিজের পছন্দের লোক যাতে চেয়ারম্যান পদে থাকতে পারেন, সে চেষ্টা করছেন তারা। অনেকেই ইতোমধ্যে নিজস্ব প্রার্থীও ঠিক করে রেখেছেন।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মানান, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মুহিববুর রহমানসহ অনেকেরই নিজস্ব প্রার্থী রয়েছে। তারা যাদের সমর্থন দিচ্ছেন, তারা কেউ ভাই, ছেলে, নিকট আত্মীয় বা পছন্দের লোক। তাদের কারো কারো বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রে অভিযোগ এসেছে বলেও জানা গেছে।
উপজেলা নির্বাচনে দলের মন্ত্রী-এমপিদের সমর্থিত প্রার্থী ও তাদের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন চাই। আওয়ামী লীগের দৃষ্টিভঙ্গি এটি, সরকারেরও। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের সক্ষমতা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেখিয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও তারা সেই স্বাক্ষর রাখবে আশা করি। এমপি-মন্ত্রীরা নিজের আত্মীয়, ঘনিষ্ঠদের অনেকেই প্রার্থী করছেন শোনা যাচ্ছে। কিন্তু তারা তো চিহ্নিত হয়ে যাচ্ছেন । আইন অনুযায়ী তারা তো কারো পক্ষে ভোট চাইতে পারেন না, আমি এমপি হিসেবে এটি করতে পারি না। এমপি-মন্ত্রীদের সতর্ক করা হয়েছে, এ নিয়ে আমাদের দলের অবস্থান স্পষ্ট।