২০১৮ আইপিএল। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ থেকে ২ কোটি ২০ লাখ রূপিতে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে যোগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশের পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। মুম্বাই অধ্যায় খুব একটা ভালো যায়নি ফিজের। ৭ ম্যাচে পেয়েছিলেন ৭ উইকেট। গড় ছিল ৩৩ এর কাছাকাছি আর ইকোনমি ছিল ৮.৩৬। সে বছরই শেষ হয়েছে ফিজের মুম্বাই অধ্যায়।
চার বছর পর ফিজ এখন মুম্বাইয়ের বড় প্রতিপক্ষ চেন্নাইয়ের বোলার। আইপিএলের সবচেয়ে সফল দুই দল এই চেন্নাই এবং মুম্বাই। দুই দলেরই ট্রফি ক্যাবিনেটে আছে ৫টি করে আইপিএল শিরোপা। রোববারের বড় ম্যাচে রাতে মুম্বাইয়ের হোমভেন্যু ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে চেন্নাই এবং মুম্বাই।
চলতি মৌসুমটা এখন পর্যন্ত বেশ দারুণই কেটেছে মুস্তাফিজের। চার ম্যাচে পেয়েছেন নয় উইকেট। এখন পর্যন্ত টিকে আছেন মৌসুমের সেরা বোলারের স্বীকৃতির দৌড়ে। তবে আজকের ম্যাচটিই হতে পারে ফিজের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। রোহিত শর্মা, সূর্যকুমার যাদব, ঈশান কিশান, টিম ডেভিডদের নিয়ে গড়া মুম্বাইয়ের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ নিশ্চিতভাবেই পরীক্ষা নেবে চেন্নাইয়ের।
এরসঙ্গে যুক্ত হবে ওয়াংখেড়ের বিশাল নীলের স্রোত। মুম্বাইয়ের হোম ভেন্যু বরাবরই দর্শক সমর্থনে পুষ্ট। বোলারদের স্নায়ুতে চাপ ফেলতে ওয়াংখেড়ের দর্শকদের জুড়ি মেলা ভার। এবারের আসরেও টানা ব্যর্থতায় ঘুরপাক খাচ্ছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। হার্দিক পান্ডিয়ার নেতৃত্বাধীন দলে বিতর্ক আর হারই ছিল সঙ্গী। সেখান থেকে অবশ্য কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে দলটি। সবশেষ দুই ম্যাচে জয় পেয়েছে ৫ বারের চ্যাম্পিয়নরা। আর মুম্বাইয়ের ঘুরে দাঁড়ানোর মিশনে এক্স-ফ্যাক্টর হয়ে ছিল ঘরের মাঠ ওয়াংখেড়ে।
হোমগ্রাউন্ডের এই সুবিধা পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছে মুম্বাই। সেইসঙ্গে গড়েছে অনন্য এক নজিরও। আইপিএলের প্রথম দল হিসেবে যেকোন মাঠে ৫০ জয়ের কীর্তি গড়েছে তারা। নিজেদের হোমগ্রাউন্ড ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে এখন পর্যন্ত ৮১ ম্যাচ খেলেছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। তাতে ১ টাই এবং ৩০ হারের পাশাপাশি আছে ৫০ জয়।
সেইসঙ্গে এখানকার নিঁখাদ ব্যাটিং পিচও হতে পারে ফিজের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত হাইস্কোরিং সব ম্যাচ দেখেছে ওয়াংখেড়ে। সবশেষ ম্যাচেই বেঙ্গালুরুর দেয়া ১৯৭ রানের টার্গেট মুম্বাই পার করেছে মোটে ১৫.৩ বলে। এই মাঠেই দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ২৩৪ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল মুম্বাই। ছোট মাঠ এবং কুইক আউটফিল্ড এই মাঠে রান করা অনেকখানি সহজ করেছে।
এবারের আসরে এখন পর্যন্ত ৯ উইকেটের ৮টিই ফিজ শিকার করেছেন চিপাকের অপেক্ষাকৃত ধীরগতির পিচে। দারুণ সব সুইংয়ে বিভ্রান্ত করেছেন ব্যাটারদের। সে তুলনায় ওয়াংখেড়েতে তাকে খেলতে হবে ফাস্ট বোলিংয়ের উপযুক্ত পিচে। স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা পরীক্ষা দিতেই হবে ফিজকে।
মুম্বাইয়ের এই লাল মাটির পিচ বরাবরই রানসহায়ক। পরিসংখ্যান বলছে বোলারদের এই মাঠে প্রতিটি উইকেটের জন্য ২৭ এর বেশি রান দিতে হয়েছে। ইকোনমিটাও সাড়ে আটের কিছু বেশি। আগে ব্যাট করে এখানে গড় স্কোর ১৬৯.৪৩। আবার পরে ব্যাট করে জয়ের শতকরা হারও বেশি।
এমনকি এই মাঠে ফিজের সবশেষ রেকর্ডও খুব একটা সুখকর না। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৯ ওভারে দিয়েছিলেন ৭৬ রান। ৭ চার আর ২ ছক্কা সেই ম্যাচে হজম করতে হয়েছিল তাকে। ওয়াংখেড়েতে তাই ফর্মের চূড়ায় থাকা ফিজের প্রত্যাবর্তন কেমন হয়, সেটাই দেখার অপেক্ষা।