পবিত্র রমজান ও আসন্ন ঈদুল ফিতর উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে মহাসড়ক/সড়কপথে যাত্রা নির্বিঘ্ন, নিরাপদ ও যানজটমুক্ত রাখার লক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
রাঙ্গা বলেন, এবারের ঈদে সম্ভাব্য কোন এলাকায় জট, যানজট বা ব্লক তৈরি হতে পারে, তা চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা এবার হাইওয়েতে ঈদযাত্রায় ড্রোনের সহায়তা নিচ্ছি। ড্রোনের সহায়তায় অবস্থা দেখে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারব। হাইওয়ের অনেক রাস্তা চার লেন হচ্ছে। কোথাও কোথাও হয়ে গেছে। এখন রাস্তায় যদি কোনো যানবাহন তাৎক্ষণিক অকেজো হয়ে পড়ে, তাহলে সেটি এখনো সরানো সহজ হবে। ত্রুটিপূর্ণ কোনো যানবাহন যাতে ঈদে সড়কে না নামে, তা নিশ্চিত করতে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি।
তিনি বলেন, ঈদে আমরা সবাই একসঙ্গে যেতে চাই। তা না করে আমরা ভাগ ভাগ করে, আগে বা পরেও যেতে পারি। তাহলে পাঁচ-সাত বা আট ঘণ্টার মধ্যেই গন্তব্যে যেতে পারব। ঈদের দুদিন আগেই যেতে হবে, ব্যাপারটা তেমন নয়। জনসংখ্যার তুলনায় গণপরিবহন আমাদের অনেক কম। হজের সময় সৌদিতে সরকার বাস ভাড়া করে। আমাদের এখানে ঈদে সে ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই আপনি আরও আগে বা ঈদের পরও যেতে পারেন। আমরা আশ্বস্ত করছি, ঈদযাত্রা স্বস্তির হবে।
তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করি কিছু লক্কর-ঝক্কর বাস যেগুলো সারা বছর সিরিয়াল পায় না, সেগুলো ঈদের সময় রাস্তায় নেমে পড়ে। এসব আমরাও ধরতে পারি না, পুলিশও বুঝতে পারে না, কোত্থেকে এগুলো রাস্তায় আসে। এগুলো রিজার্ভ হিসেবে চলে। গার্মেন্টস শ্রমিকরা নিয়ে যায়। যে রাস্তায় আমাদের ছোট বাসও চলে না সেখানে দেখি বিআরটিসির ডাবল ডেকার বাস ঢুকে পড়ে। আমরা এখনো মহাসড়ক থেকে নছিমন, করিমন ও ভটভটি সরাতে পারিনি। এটাও একটা বাধা আমাদের।
প্রতি বছরই বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ আসে। প্রমাণও মেলে। কিন্তু কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায় না। এ প্রসঙ্গে রাঙ্গা বলেন, অনেক পরিবহনই ঈদের সময় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে। যেসব বাস কোম্পানি সুনামের সঙ্গে কাজ করছে, তাদের কোনো বাস যদি ভাড়া বেশি নেয়, তাহলে আমাদের জানাবেন, আমাকে জানাবেন, ব্যবস্থা নেবো। প্রয়োজনে স্পটে উপস্থিত হবো। অভিযোগ পেলেই আমরা সেখানে যাবো। কোন কোন জায়গায় কারা বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে, তা আমরা শনাক্ত করব।
কোনো গণপরিবহনের বাড়তি ভাড়া নেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে কী ব্যবস্থা নেবেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ পেলে সেই গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেব। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনের সড়কের তিনটি লেনই অবৈধ পার্কিংয়ের দখলে। যার বড় প্রভাব পড়ে সড়ক চলাচলে। তার সমাধান না হলে ঈদে অনেকটা সময় কেটে যাবে ঢাকাতেই। এ নিয়ে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, লক বা ব্লক করে রাস্তায় দাঁড়ানোর কোনো অধিকার আমাদের নেই। যারা অবৈধভাবে পার্কিং করবে সড়কে, আর যানচলাচল বিঘ্নিত করবে, তাদের বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশ আইনানুগ পদক্ষেপ নেবে, আমাদের কোনো সমস্যা নেই।
মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে তো সড়কই নেই, সড়ককেই টার্মিনাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি এখান থেকে বের হয়েই আগে মহাখালী যাবো। দেখি সেখানে কি সমস্যা। আবারো বলছি, যারাই অবৈধ পার্কিং করছে, অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব আমরা।
সভায় সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা উপস্থিত ছিলেন।