নিজস্ব প্রতিবেদক
ক্যান্সার রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। রাজশাহী ছাড়াও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা এমনকি খুলনা বিভাগের রোগীরাও আসছেন এখানে চিকিৎসা নিতে। কিন্তু সেবা দেয়ার জন্য যন্ত্রপাতির অপ্রতুলতার কারণে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, ক্যান্সারের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ
রেডিও থেরাপির জন্য যে মেশিন আছে সেটি চাহিদার তুলনায় কম। এঅবস্থায় নতুন কিছু যন্ত্রপাতির জন্য মন্ত্রনালয়ে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু সেগুলো কবে নাগাদ পাওয়া যাবে তার কোন আভাসও পাচ্ছেন না তারা। এসব যন্ত্র না আসলে সংকট কাটার কোন সম্ভাবনা দেখছেন না তারা।
রামেক হাসপাতলে রেডিওলজি বিভাগের সামনে রোগীদের প্রতিদিনের হতাশা চিত্র চোখে পড়ে। চিকিৎসা নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগী।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের তথ্য মতে, গত ১ জুলাই থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এখানে নতুন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন ১ হাজার ৩২৯ জন। এছাড়াও চিকিৎসা নিয়েছেন পুরাতনরাও। নতুন ও পুরাতন মিলে গড়ে প্রতিদিন এখানে ১৫০ থেকে ২০০ জন রোগী রেডিও থেরাপির জন্য আসেন। তবে রামেক হাসপাতালের রেডিও থেরাপির সক্ষমতা প্রতিদিন মাত্র ৬০ জনের। আগে এখানে ৮০ জনের থেরাপি দিতে সক্ষম থাকলেও বর্তমানে সক্ষমতা কমে ৬০ জনে দাঁড়িয়েছে। আগামীতে এটি আরো কমবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ অসীম কুমার ঘোষ বলেন, রাজশাহীতে প্রতিদিনই ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। শিশু থেকে বয়স্ক সব বয়সি মানুষই ক্যান্সারের রোগী। তবে, বেশি সনাক্ত হচ্ছে মেয়েদের ব্রেস্ট ক্যান্সার। ১৫ শতাংশ রোগীই ব্রেস্ট ক্যন্সারের। প্রতিদিন এখানে গড়ে ৬০ জনকে রেডিও থেরাপি দিতে পারি। তবে, চাহিদা থাকে তারও দ্বিগুন বা তিনগুন। পর্যায়ক্রমে আমাদের থেরাপি দিতে হয়।
তিনি বলেন, আমাদের এখান থেকে বার বার একটি নতুন মেশিন দেওয়ার জন্য আবেদন করা হচ্ছে। আমাদের এখন খুব জরুরী হলো একটি কোবাল্ট মেশিন অথবা একটি লাইনআপ মেশিন। কিন্তু আমাদের বলা হচ্ছে বিশেষায়িত ক্যান্সারের যে নতুন হাসপাতাল হবে সেখানে এগুলো দেওয়া হবে।
ডাঃ অসীম কুমার ঘোষ বলেন, বগুড়াতে একটি রেডিও থেরাপির মেশিন থাকলেও সেটিও মাঝে মধ্যে নষ্ট থাকে। একারণে সেখানকার রোগীরা এখানেই ছুটে আসে। কিন্তু আমাদের তো সক্ষমতার বাহিরে যাবার সুযোগ নেই। এজন্য পর্যায়ক্রমে চিকিৎসা দিচ্ছি। এই সংকট কাটাতে আমাদের জরুরী ভিত্তিতেই আরও মেশিন দরকার। এর বিকল্প নেই।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, আমরা মন্ত্রনালয়কে বলেছি। আমাদের গোটা উত্তরাঞ্চলে একটি মেশিন হবার কারণেই রোগীদের সিরিয়াল পেতে ভোগান্তি হচ্ছে। এখানে একটি আধুনিক ক্যান্সার হাসপাতালের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। সেটি শেষ হলে কিছু মেশিন পাবো। তখন এই সমস্যার সমাধান হবে। তবে এর আগেও রোগীদের ভোগান্তি কমাতে আমরা একটি মেশিন আনার চেষ্টা করছি।