• ঢাকা, বাংলাদেশ বুধবার, ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০২:১৮ পূর্বাহ্ন
নোটিশ
রাজশাহীতে আমরাই প্রথম পূর্ণঙ্গ ই-পেপারে। ভিজিট করুন epaper.rajshahisangbad.com

গত রোজায় স্বামী আর এবার মেয়েকে হারালাম: অবন্তিকার মা

রিপোর্টার নাম:
সর্বশেষ: শনিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৪

রাজশাহী সংবাদত ডেস্ক :

আমার মেয়ে বিচারক হতে চেয়েছিল। কিন্তু ওরা তাকে বাঁচতে দিল না। ও সাহসী মেয়ে ছিল। বিচার না পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিল।কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁওয়ের বাসায় আত্মহত্যা করা জবি শিক্ষার্থী অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনমের আহাজারি যেন থামছেই না। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করা মেয়ের জন্য কাঁদতে কাঁদতে নিজের দুঃখের কথা বলছিলেন তিনি।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাতে আহাজারি করতে করতে এই কথাগুলো বলেন তিনি।

অবন্তিকার মা শবনম বলেন, মৃত্যুর কয়েক মিনিট আগে রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবন্তিকা আমাকে এক গ্লাস পানি দিয়ে গেল। এর কিছুক্ষণ পর ওর রুমে ফ্যানের শব্দ না পেয়ে ডাকাডাকি করি। কোনো সাড়া না পেয়ে ছেলেকে নিচে পাঠাই। সে নিচের দারোয়ানকে নিয়ে মই দিয়ে পূর্ব পাশের জানালা খুলে দেখে, অবন্তিকা ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। এরপর পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা পুলিশের একজন সদস্যসহ আমরা ওকে নামাই। পরে তাকে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে মেয়েকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার বাবা মো. জামাল উদ্দিন মৃত্যুর আগে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। এছাড়া তিনি কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজ ও কুমিল্লা সরকারি কলেজে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন। ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল রোজার সময় তার মৃত্যু হয়। তাদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা শহরতলির শাসনগাছা মহাজন বাড়ি এলাকায়। অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম কুমিল্লা পুলিশ লাইনস উচ্চবিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন। এছাড়া তিনি উপস্থাপনা করতেন। অবন্তিকার ছোট ভাই এসএসসি পরীক্ষার্থী।

অবন্তিকার মামা কুমিল্লা শহরতলির চাঁনপুর এলাকার বাসিন্দা এ বি এম লুৎফর আনোয়ার ভূঞা বলেন, এক বছরের মাথায় আমার বোনটি স্বামী ও মেয়েকে হারিয়েছে। এ শোক সে কেমনে সইবে! এটা আত্মহত্যা না, তিলে তিলে মানসিক নির্যাতন করে মারা। আমরা এর বিচার চাই।

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিয়ামুল হোসাইন বলেন, এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। শনিবার দুপুরে মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে। এরপর সেটি পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

মা তাহমিনা শবনমের অভিযোগ, এক বছর আগে থেকে অবন্তিকার এক সহপাঠী নানাভাবে তাকে নিপীড়ন করতেন। এ নিয়ে তার মেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের কাছে নালিশ করেন। কিন্তু সহকারী প্রক্টর ঘটনার বিচার করেননি। বরং তার মেয়েকে ডেকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন এবং ওই ছেলের পক্ষ নেন। তখন ওই ছেলে আরও বেপরোয়া হয়ে পড়ে। আপত্তিকর মন্তব্য করতেন, হুমকি দিতেন। এসব ঘটনার বিচার চেয়ে না পেয়ে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। মেয়ের এমন মৃত্যু অপ্রত্যাশিত।


আরো খবর