গরম মানেই ঘাম, তৃষ্ণা। থাকে পানিশূন্যতারও ভয়। তবে এই সমস্যার রয়েছে সমাধানও। গরমের তাপকে হার মানাতে এই সময়ে অনেককিছুই রয়েছে যা আপনার জন্য সহায়ক। পানিশূন্যতা এড়ানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হলো পর্যাপ্ত তরল পান করা। তবে শুধু তরল পান করলেই হবে না, তা যেন শরীরের জন্য সহায়ক হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। গরমে অনেক রকম মৌসুমী ফল পাওয়া যায়, সেগুলো নিয়মিত রাখতে হবে খাবারের তালিকায়। পানিশূন্যতা রোধে আপনাকে করতে হবে এই কাজগুলো-
১. আপনার চাহিদা বুঝুন
আপনি হয়তো প্রতিদিন অন্তত ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করার পরামর্শ শুনেছেন। যদিও পরামর্শটি বেশ যুক্তিসঙ্গত, তবে ব্যক্তিভেদে এই চাহিদা আলাদা হতে পারে। ইউনিভার্সিটি অফ নেব্রাস্কা-লিঙ্কন-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের একটি নিবন্ধ অনুসারে, আপনার জন্য প্রয়োজনীয় পানির পরিমাণ আপনার লিঙ্গ, স্বাস্থ্য, কার্যকলাপের স্তর, পরিবেশ এবং অন্যান্য বিভিন্ন কারণের ওপর নির্ভর করে। সুতরাং, বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন যে, আপনার শরীরের কী প্রয়োজন তা বুঝতে এবং পর্যাপ্ত তরল গ্রহণের বিষয়ে সচেতন হতে হবে
২. অতিরিক্ত হাইড্রেট নয়
বিশ্বাস করুন বা না করুন, অতিরিক্ত পানি পান করা বা আপনার ডায়েটে অতিরিক্ত পরিমাণে তরল যোগ করা ক্ষতিকারক হতে পারে। ভারতের গুরুগ্রামের নারায়না হাসপাতালের সিনিয়র ডায়েটিশিয়ান পারমিত কৌর বলেছেন, স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত পানি পান করার অভ্যাসর মোট রক্তের পরিমাণ বাড়ায় এবং কিডনিকে সংবহনতন্ত্র থেকে অতিরিক্ত পানি ফিল্টার করার জন্য অতিরিক্ত কাজ করার জন্য চাপ দেয়। তাই জোর করে পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন।
৩. তৃষ্ণার্ত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করবেন না
তৃষ্ণার্ত হয়ে গেলে আমরা একসঙ্গে অনেকখানি পানি পান করে ফেলি। যার ফলে পেট ফাঁপা, মাথাব্যথা এবং মাঝে মাঝে মাথা ঘোরার মতো সমস্যা হতে পারে। তাই ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মতে, ডিহাইড্রেশনকে হারানোর সর্বোত্তম উপায় হলো তৃষ্ণার্ত হওয়ার আগে পান করা।
৪. বাইরে থাকলে বেশি পানি পান করুন
গ্রীষ্মে ঘর থেকে বের হওয়া মানে অতিরিক্ত ঘাম এবং তরল ক্ষয়। এটি অনিবার্যভাবে পানিশূন্যতার ঝুঁকি বাড়ায়। জন হপকিন্স মেডিকেল স্কুলের একটি প্রতিবেদনে শরীরের তরল, ইলেক্ট্রোলাইট এবং লবণের ভারসাম্য পুনরুদ্ধারের জন্য রিহাইড্রেশনের কথা বলা হয়েছে। এধরনের ক্ষেত্রে, নিজেকে ভালোভাবে হাইড্রেটেড রাখতে পানি ছাড়াও ডাবের পানি, লেবুর শরবত এবং এই জাতীয় অন্যান্য ইলেক্ট্রোলাইট-সমৃদ্ধ পানীয় পান করবেন। বাইরে বের হলে এগুলো পান করুন।
৫. সঠিক তরল বেছে নিন
যখন পানীয়ের প্রসঙ্গ আসে, বিকল্পের কোনো অভাব নেই। এতসব পানীয়ের ভিড়ে কোনটি আপনার জন্য সঠিক তা বেছে নিতে হবে। যেমন কোল্ড ড্রিংকস, আইসড টি বা কোল্ড কফি তাত্ক্ষণিক আরাম দিতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদে এগুলোর নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মতে, ক্যাফেইন, মিষ্টিযুক্ত পানীয় এবং অ্যালকোহল হলো মূত্রবর্ধক। এজাতীয় পানীয় অতিরিক্ত পান করলে তা ডিহাইড্রেশন এবং সম্পর্কিত স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়ায়।