বেশ কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি ঘুরে এসে এবার আইপিএলের অন্যতম সফল দল চেন্নাই সুপার কিংসকে ঠিকানা বানিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। সাম্প্রতিক সময়ে বল হাতে কিছুটা সংগ্রাম করা বাংলাদেশি এই পেসার চেন্নাইয়ের হয়ে দুই ম্যাচেই জ্বলে উঠেছেন। ৬ উইকেট নিয়ে আছেন উইকেটশিকারীর তালিকায় শীর্ষে। এমন পারফরম্যান্সের সুবাদে ফিজকে প্রশংসায় মাতাচ্ছেন সাবেক ক্রিকেটার ও বিশ্লেষকরা।
চেন্নাইয়ের হয়ে প্রথম ম্যাচে যখনই ব্রেকথ্রু দরকার ছিল, তখনই আক্রমণে এসে সফল হয়েছিলেন মুস্তাফিজ। ২৯ রান খরচায় সেই ম্যাচে তিনি ৪ উইকেট নেন। এরপর হয়েছেন ম্যাচসেরাও। দ্বিতীয় ম্যাচের শুরুটা আশা জাগানোর মতো হয়নি টাইগার পেসারের। কিন্তু শেষ ভালো যার, সবটাই ভালো তার। মুস্তাফিজের বেলায়ও তাইই হলো। প্রথম দুই ওভারে ২৩ রান দেওয়া ফিজ, শেষ দুই ওভারে দিলেন মোটে ৭ রান। পেলেন দুই উইকেট।
ডেথ ওভারের বোলিংয়ে ফিজের কার্যকারীতা কারও অজানা নয়। সেটাই গতকাল চেন্নাইয়ের জার্সিতে আবারও দেখালেন তিনি। ডেথ ওভারে তার পারফরম্যান্স দেখে খুশি চেন্নাইয়ের ব্যাটিং কোচ মাইক হাসিও। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের পুরো ফোকাসটা এখন ডেথ বোলিংয়ে। পাথিরানাকে (মাথিশা) ফিরে পাওয়াটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয় মুস্তাফিজের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই। প্রথম দুই ম্যাচে সে তার কাজটা করে দিয়েছে। বাঁ-হাতি পেসার হিসেবে সে আমাদের দারুণ একটা অপশন।
ম্যাচের পরিস্থিতির সঙ্গে মিল রেখে মুস্তাফিজ কাটার ও স্লোয়ারেও বৈচিত্র্য আনেন। কৌশল খাটিয়ে করা তার বোলিংয়ের জন্য বাহবা দিতেও ভুললেন না হাসি, ‘তার স্লোয়ারগুলো বেশ ভালো। ডেথে যখন সে বোলিং করে চাপের মাঝেও মাথা ঠাণ্ডা রাখে। আমার মনে হয় এই মুহূর্তে এটা আমাদের কাজে দিচ্ছে। ডেথের জন্য আমাদের এখন ভালো অপশন আছে। এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
গতকালের ম্যাচে মুস্তাফিজ প্রথম দুই ওভারে সেভাবে সুবিধা করতে পারেননি। প্রথম দুই ওভারে কিছুটা খরুচে বোলিং করেন তিনি। পরে ১৭তম ওভারে এসে রশিদ খান এবং ১৯তম ওভারে রাহুল তেওয়াটিয়াকে ফেরান ফিজ। বিনিময়ে মাত্র ৭ রান দেওয়ায়, তার বোলিং ইকোনমিও নেমে আসে সাড়ে সাতে। ফলে ডেথ ওভারেই যে ফিজ কতটা দক্ষ সেটি আরেকবার প্রমাণ পাওয়া যায়।
সবমিলিয়ে মুস্তাফিজের এবারের আইপিএল যাত্রা শুরুটা হয়েছে দুর্দান্ত। তবুও গত আসরে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের প্রধান অস্ত্র মাথিশা পাথিরানা তার মাথাব্যথার কারণ। সেক্ষেত্রে দুজনকেই যেন একসঙ্গে খেলানো হয় তার পরামর্শ দিয়েছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা। যেকোনো একজনকে খেলানো হলে, ডেথ ওভারে বেশ চাপ তৈরি হবে বলে মনে করেন ইরফান পাঠান, টম মুডি ও মিচেল ম্যাকলানাঘান। সেক্ষেত্রে অবশ্য গতকালের ম্যাচের মতো স্পিনার মাহিশ থিকশানার একাদশে সুযোগ পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে।