প্রচন্ড তাপদাহে রাজশাহীর তানোর উপজেলার পোল্ট্রি খামারীরা পড়েছেন মহা বিপদে। প্রতিটি পোল্ট্রি খামারে প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০ টি মুরগী হিট ষ্ট্রোকে মারা যাচ্ছে। এর ফলে চলতি মৌসূমে তানোর পোল্ট্রি খামারীদের ব্যাপক লোকসানে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে।
তানোর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা মোঃ ওয়াজেদ আলী জানান, তানোর উপজেলাতে প্রায় ১২শ’এর মত পোল্ট্রি ও লেয়ার মুরগীর খামার রয়েছে।এর মধ্যে দেশী জাতের মৃুরগীর সংখ্যা প্রায় ৫হাজার ,বয়লার মুরগীর সংখ্যা প্রায় ৭হাজার, এবং লেয়ার মুরগীর সংখ্যা প্রায় ৭হাজার।বিগত কয়েক দিনের তীব্র তাপদাহে মানুষের পাশাপাশি বয়লার এবং লেয়ার মুরগী হিট ষ্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে।
তানোর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা মোঃওয়াজেদ আলী জানান তিনি জানান ০থেকে ২১ দিনের পোল্ট্রি মৃুরগীগুলো হিট ষ্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে।তালান্দ গ্রামের বিসমিল্লাহ পোল্ট্রি ফার্মের স্বত্তাধিকারী ফারুক ও রতন জানান ২২থেকে ২৫দিনের মুরগী গুলো হিট ষ্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে বেশী।তিনি জানান প্রতিদিন হিট ষ্ট্রোকে ৫০০সেড এর ফার্মের খামারে ৮থেকে ১০টি মুরগী মারা যাচ্ছে।এ থেকে প্রতিদিন খামারীর ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ১৫ শ টাকা থেকে ১৮শ টাকা।
উপজেলার কামার গাঁ ইউনিয়নের মাদারীপুর বাজারের পোল্ট্রি খাদ্য ও ঔষধ ব্যবসায়ী কুদরোত নয়মদ্দিন জানান,সাধারনত:যে সমস্ত খামারে মুরগীর বয়স ২০থেকে ২৫দিন সে সমস্ত খামারের মুরগীগুলো আক্রান্ত হচ্ছে বেশী।তিনি আরো জানান,হিট ষ্ট্রোক থেকে মুরগীগুলোকে রক্ষা করার জন্য প্রতিদিন সকালে বায়োভেট পাউডার পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
দুপুরে হাইড্রোসল লিকুইড পানির সাথে মিশিয়ে মুরগীর গায়ে স্প্রে করতে হবে।তানোর উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরের উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান,যে সমস্ত খামারীগণ বেশি বেশী ষ্টেরয়েড জাতীয় খাদ্য খাওয়ান সে সমস্ত খামারের মুরগী গুলোর হিট ষ্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বেশী।তিনি আরো জানান, খামারের মুরগীগুলোকে হিট ষ্ট্রোক থেকে রক্ষা করার জন্য গ্লুকোজ, স্যালাইন,নিরাপদ ঠান্ডা পানি বার বার খাওয়াতে হবে ইলেকট্রিক ফ্যানের বাতাস দিতে হবে।
এ ছাড়া প্রচন্ড তাপ থেকে রক্ষা করার জন্য খামারের চালের উপর চটের বস্তা দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে।সাধরনত আমাদের দেশের বয়লার মুরগীগুলো ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেন্টি গ্রেড তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে কিন্ত গত কয়েক দিন ধরে কলারোয়া এলাকায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়ািস থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা উঠা নামা করছে।এক দিকে প্রচন্ড তাপমাত্রা অন্য দিকে বিদ্যূৎ এক অব্যাহত লোড সেডিং এর কারনে খামারীদের মাঝে হাহাকার শুরু হয়েছে।
এ অবস্থা চলতে থাকলে তানোর উপজেলার পোল্ট্রি খামারীগণকে এবারের মৌসুমে ব্যাপক লোকসান গুনতে হবে।ব্যাংক,বিভিন্ন এন জি ও থেকে চড়া সুদে লোন নেওয়া এবং খাদ্য ও পোল্ট্রি ঔষধের দোকান থেকে বাকী নেওয়া খামারীরা দেনার দায়ে খামার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।এ অবস্থা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য খামারীগণ সহজ শর্তে ঋন ও পোল্ট্রি খাদ্য ও ঔষধের দাম কমানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন তানোর উপজেলার খামারিরা।