এবছর পঞ্চমবার প্রেসিডেন্টের আসনে বসবেন পুতিন। অর্থাৎ, ২০৩০ সাল পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় থাকবেন। যারা তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন, তারাও কার্যত পুতিনের তেমন কোনো সমালোচনা করছেন না। অনেকেই বলছেন, এই নির্বাচন আসলে লোক দেখানো।
কিছুদিন আগেই রাশিয়ার জেলে মৃত্যু হয়েছে নাভালনির। অভিযোগ, তাকে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে তাকে বিষ দিয়ে মারার চেষ্টা হয়েছিল বলেও অভিযোগ ছিল। জার্মানিতে তার চিকিৎসা হয়েছিল।
পুতিনের আরেক সমালোচক বরিস নাদেঝদিন। কিন্তু রাশিয়ার আদালত তাকে ভোটে দাঁড়াতে দেয়নি। সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছিলেন বরিস। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টও তাকে ভোটে দাঁড়ানোর অনুমতি দেয়নি। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বরিস দাঁড়ালে পুতিনকে লড়াইয়ের মুখে ফেলতে পারতেন।
পুতিনের বিরোধী হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়েছেন ৭৫ বছরের কমিউনিস্ট প্রার্থী নিকোলাই খারিতোনভ। সাধারণত, দ্বিতীয় স্থানে থাকেন তিনি। তবে পুতিনের সঙ্গে তার ভোটের ব্যবধান থাকে বিরাট। স্থানীয় কিছু বিষয়ে পুতিনের বিরোধিতা করলেও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পুতিনের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে ৪০ বছরের ভ্লাদিস্লাভ দাভানকোভ পুতিনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। তিনিও জানিয়ে দিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার বিশেষ কোনো মতপার্থক্য নেই। শুধুমাত্র ব্যক্তিস্বাধীনতা নিয়ে তিনি ভোটের প্রচারে কথা বলেছেন।
সমীক্ষা বলছে, নিকোলাই এবং ভ্লাদিস্লাভ যৌথভাবে চার থেকে পাঁচ শতাংশ ভোট পেতে পারেন। বাকি পুরো ভোটই পাবেন পুতিন। রাজনৈতিক মহলে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, এই লোক দেখানো নির্বাচনের আদৌ কি কোনো প্রয়োজন ছিল?
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, এই ভোট থেকে দেশের ভেতরে এবং দেশের বাইরে দুইটি বিষয় প্রমাণ করতে চাইছেন পুতিন। দেশের ভেতর তিনি দেখাতে চাইছেন রাশিয়ার অধিকাংশ মানুষ তার সঙ্গে আছেন। অর্থাৎ, প্রেসিডেন্টকে নিয়ে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ।
দেশের বাইরে পুতিন এই ভোটের মাধ্যমে বোঝাতে চাইছেন, তার নেওয়া সমস্ত সিদ্ধান্ত দেশের মানুষ সমর্থন করছেন। অর্থাৎ, ইউক্রেন অভিযান নিয়ে দেশের ভেতর কোনো বিরোধিতা নেই। বহির্বিশ্বে এই বার্তাটি দেওয়া অত্যন্ত জরুরি ছিল বলেই মনে করেন পুতিন বিশেষজ্ঞরা।
আপাতভাবে ভোটে বিশেষ বিক্ষোভের আশঙ্কা দেখছে না ক্রেমলিন। কারণ অধিকাংশ পুতিন-বিরোধী নেতা এখন দেশছাড়া। তবে দেশের বাইরে থেকেই তারা সমর্থকদের পুতিনের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার আবেদন করেছেন।
নাভালনির স্ত্রী রাস্তায় নেমে পুতিনের বিরোধিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত কতটা বিরোধ হবে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিতর্ক আছে।