রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় দেশী মুরগির পাশাপাশি ঘরে ঘরে উচ্চ বর্ধনশীল বয়লার মুরগি পালন শুরু করেছে প্রান্তিক পর্যায়ের গৃহিনীরা। অতিরিক্ত চাহিদা থাকায় ২৫ টাকার বাচ্চা এখন ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছে কোম্পানি নির্ধারিত দামে তাঁরা বাচ্চা বিক্রি করছেন।
গতবছর দেশ জুড়ে স্থিতিশীল বয়লার মুরগি দর হঠাৎ করে ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। কোম্পানির সিন্ডিকেটে কোণঠাসা হয়ে পড়ে ছোট খামারিরা। বাচ্চার অতিরিক্ত দাম, খাবারের অতিরিক্ত দামে, লোকসানে অনেক খামারী মুরগি পালন থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয় । সেই সুযোগে কোম্পানিগুলো ১২০ টাকা কেজির মুরগির ২০০ টাকা করে বিক্রি শুরু করে। সরকারের হস্তক্ষেপে দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণ এলেও আবারো পূর্বের অবস্থানে ফিরেছে বয়লার মুরগির দাম ।
নিম্নআয়ের মানুষেরা তাদের মাংসের চাহিদা মেটাতে বেছে নিয়েছে ভিন্ন পন্থা। ঘরে ঘরে পালন শুরু করেছে বয়লার মুরগি। ফেরি করে হাঁকিয়ে হাঁকিয়ে বয়লারের বাচ্চা বিক্রি হচ্ছে । প্রতি গৃহিনী পাঁচ থেকে দশটি করে বাচ্চা কিনে দেশি হাঁস, মুরগির, পাশাপাশি পালন করছে। তবে বাচ্চার অতিরিক্ত দাম ও খাবারের উচ্চমূল্যের জন্য তেমন লাভ হচ্ছে না।
উপজেলা বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, হাঁস মুরগি পালন করা প্রতিটি বাড়িতেই এখন বয়লারের সবর উপস্থিতি। ফিডের পাশাপাশি, ধান, চাল, গম, দেওয়া হচ্ছে বয়লার-কে খেতে। খামারে পালন করা বয়লার প্রতি কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দারে বিক্রি হলেও বাড়িতে পালন করা মুরগি ২২০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি করে বিক্রি হচ্ছে।
গৃহিনী মনজুরা বেগম জানায় , অভাবের সংসারে আমাদের পরিবারের চাহিদা মেটাতে দেশি মুরগির পাশাপাশি পাঁচটা করে বয়লার মুরগি পালন করি। দেশি মুরগিকে যে খাবার দেই সে খাবার দিয়ে বয়লার পালন করি। বাচ্চা ছোট থাকতে একটু ফিড দিয়েছিলাম। বাজারের তুলনায় আমাদের বয়লার খেতে অনেক সুন্দর ও শক্ত হয়। আবার টাকার দরকার হলে এলাকার ক্রেতাদের কাছে আড়াইশো টাকা কেজি দরে বিক্রি করি। যা আমার সংসারে কাজে লাগে। তবে দিন দিন বয়লারের বাচ্চার দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে এটি পালন আমাদের কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে ।
এবিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, খামার ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। খামারে পালন করার বয়লার এখন বাড়িতে বাড়িতে পালন হচ্ছে। পূর্বে নানা সংকোচে থেকে অনেকে বয়লারের মাংস খেতে ভয় করত । বাড়িতে পালন করা বয়লার ফিডের পরিবর্তে নিজেদের খাবার দিয়ে পালন করছে এটা সবাই খাচ্ছে ।
খামারে পালন করা বয়লার ও বাড়িতে পালন করা বয়লারের মাঝে ব্যাপক পার্থক্য এসেছে। যেহেতু বাড়িতে পালন করা বয়লার খোলা আবহাওয়া বড় হচ্ছে বেশি সময় পাচ্ছে বেড়ে ওঠার। এর কারণে মাংসের গুণগত মান ব্যাপক বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার বয়লারের ফ্লেভারটা তুলনামূলক কম আসছে, ফলে মাংসটা অনেক বেশি সুস্বাদু হচ্ছে। তাই প্রান্তিক পর্যায়ে বয়লার পালন জনপ্রিয়তা পেয়েছে।