শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১১ শতাংশ। যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এটিই।
জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ আরও কিছু দিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগামী তিন দিন আরও তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। ৪৩ থেকে ৪৪ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠতে পারে তাপমাত্রা। সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করেন তিনি।
এদিকে তীব্র গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোডশেডিং। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে চুয়াডাঙ্গার জনজীবন। সব থেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছে শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা। গরমে এসি ও ফ্যানের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে বিদ্যুতের ব্যবহারও। ফলে বেড়েছে লোডশেডিং। দিনে বাসায় থাকা দায় হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাতে মশার যন্ত্রণা। গরমের সঙ্গে ঘন ঘন লোডশেডিং হওয়ায় সারা রাত নির্ঘুম কাটাতে হচ্ছে।
অপরদিকে জেলা সদর হাসপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়া ও শিশু রোগীর সংখ্যা। ওয়ার্ডের মেঝেতে রেখে চলছে চিকিৎসা। এছাড়া বহির্বিভাগেও রয়েছে রোগীদের চাপ। প্রতিদিন গড়ে গরমজনিত কারণে ৭০০-৮০০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহা: আতাউর রহমান।
গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু বিদ্যুতের উৎপাদন সে তুলনায় না বাড়ায় লোডশেডিং বেড়েছে বলে জানিয়েছেন মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চুয়াডাঙ্গা জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আবু হাসান।
তিনি বলেন, জেলায় গরমে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। পল্লী বিদ্যুতের আওয়াধীন এলাকায় প্রতিদিন প্রায় ১০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। সেখানে আমরা পাচ্ছি ৯০-৯২ মেগাওয়াট। আমাদের মূল গ্রিডের যে ধারণক্ষমতা, সেখানেও টানতে পারছে না। ঘাটতি পূরণ করতেই লোডশেডিং চলছে।
চুয়াডাঙ্গা সদরের পদ্মবিলা ইউনিয়নের বাসিন্দা সাবিক আল হাসান বলেন, প্রতিদিন রাতে কয়েকবার বিদ্যুৎ চলে যায়। চরম দুর্ভোগে আছি আমরা। রাতেও ঘুম হয় না।
সদরের মাখালডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল হাকিম বলেন, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে ঘরে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়ছে। বাড়িতে শিশুরা গরমে অস্থির হয়ে পড়ছে। বাইরে বের হলে মনে হচ্ছে রোদের তাপে শরীর পুড়ে যাচ্ছে। তার ওপর রাতের লোডশেডিংয়ে দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে।