রাজশাহী সংবাদ ডেস্ক :
দেশটির বেশিরভাগ অঞ্চলে বিদ্রোহীদের সাথে সামরিক বাহিনীর ক্রমবর্ধমান সংঘাতের মাঝে আগামী নির্বাচন নিয়ে নতুন এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন মিন অং হ্লেইং।
তিন বছর আগে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করে সামরিক বাহিনী। দেশটি এখনও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ফেরার পরিকল্পনা করছে বলে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা তাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন মিন অং হ্লেইং।
রুশ বার্তা সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের অনুবাদ মিয়ানমারের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার পর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী প্রথম ক্ষমতা দখল করেছিল ১৯৬২ সালে। এরপর দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের ক্ষমতায় জেঁকে বসে জান্তা।
মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বে দেশটিতে শুরু হওয়া গণতান্ত্রিক যাত্রা হোঁচট খায় ২০২১ সালে। ওই সময় মিন অং হ্লেইং নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী সু চির সরকাকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটিতে আবারও সামরিক শাসন জারি করে জান্তা। তবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এবার দেশটির জাতিগত বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও জান্তাবিরোধী প্রবল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে।
দেশটির উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র বিভিন্ন গোষ্ঠীর পুনরুত্থানের বিরুদ্ধে ব্যাপক লড়াই করছে সেনাবাহিনী। দেশটিতে বেসামরিক লোকজনের ওপর সামরিক বাহিনী পরিকল্পিত নৃশংস অভিযান পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ করেছে বিদ্রোহীরা। যদিও মিয়ানমার জান্তা এই অভিযোগ বরাবরের মতো অস্বীকার করেছে।
তাসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মিন অং হ্লেইং বলেছেন, দেশ যদি শান্ত এবং স্থিতিশীল হয়, তাহলেই কেবল আমাদের সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা রয়েছে। আইন অনুযায়ী, সারা দেশে নির্বাচন না হলেও আমরা যতটুকু পারি আয়োজন করবো।
মিয়ানমারের ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে দফায় দফায় ছয় মাস করে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়েছে সামরিক জান্তা। তারা বলেছে, দেশে স্থিতিশীলতা আনতে এবং সরকার-বিরোধীদের গুঁড়িয়ে দিতেই জরুরি অবস্থা দরকার। ক্ষমতাসীন জান্তা সরকারের বিরোধিতাকারীদের সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়েছে জান্তা।
জাতিগত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী ও ছায়া সরকারের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা মিলিশিয়াদের মিত্র জোটের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যুদ্ধবিমান ও ভারী কামান মোতায়েন করেছে জান্তা সরকার। জাতিসংঘ বলছে, মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর শুরু হওয়া অস্থিতিশীলতায় এখন পর্যন্ত ২৩ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
মিয়ানমারের জান্তা শাসনের সমালোচক ও পশ্চিমা দেশগুলো বলেছে, মিয়ানমারে পাতানো নির্বাচন অনুষ্ঠত হতে পারে। কারণ অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪০টিরও বেশি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া সামরিক জান্তাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে এমন নতুন রাজনৈতিক দল গঠনকেও কঠিন করে তুলতে আইন তৈরি করা হয়েছে।