সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, রাজশাহী শিক্ষানগরী। এখানে হাজার হাজার শিক্ষার্থী, বেসরকারি ও সরকারি কর্মচারীরা থাকেন। তাদের নিরাপদে বাড়ি ফেরাতে রেলওয়ের উচিত ছিল একটি হলেও ঈদ স্পেশাল ট্রেন দেওয়া। কিন্তু তারা এটি করেননি। এভাবে বরাবরই রাজশাহীর মানুষের সাথে বৈষম্য করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি আহমেদ শফি উদ্দিন বলেন, এসব সমস্য ও রাজশাহীবাসীর চাওয়া-পাওয়া দেখার জন্য জনপ্রতিনিধিরা আছেন। তাদেরই প্রধান দায়িত্ব এসব দেখা। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা। কিন্তু স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আজকাল আর বাস-ট্রেনে চড়েন না, দামি গাড়ি আর বিমানে চড়েন। কাজেই এ নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। তবে বিষয়গুলো কোনোভাবেই এমন হওয়া উচিত নয় বলেও তিনি মত দেন।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, রাজশাহী, রংপুর ও খুলনাতে এবার ঈদ স্পেশাল ট্রেন নেই। কেবল জয়দেবপুর থেকে পার্বতীপুর রুটে একটা ঈদ স্পেশাল ট্রেন চলবে। আর রংপুর রুটে সম্প্রতি বুড়িমারী এক্সপ্রেস চালু হয়েছে। সেই কারণে ওই বিভাগে একটা ঈদ স্পেশাল দেওয়া হয়েছে। আর খুলনা-রাজশাহী বিভাগে কখনও ঈদ স্পেশাল ট্রেন ছিল না। পঞ্চগড় বা চিলাহাটি এলাকার লোকজন অনেক বেশি, রাস্তাঘাটও ভালো না সেই বিবেচনায় ঈদ স্পেশাল দেওয়া হয় বলেও উল্লেখ করেন।
এছাড়া ঢাকা থেকে দেওয়ানগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ওদিকের যাত্রী চাপটা বেশি। তারা স্বাভাবিকভাবেই ছাদেই ভ্রমণ করতে চান। দেওয়ানগঞ্জে ট্রেনগুলো যায়, একদম ঠাসা থাকে। ঈদ স্পেশাল ট্রেন রেল পূর্বাঞ্চলের দখলে থাকার পেছনে অনেকগুলো কারণের মধ্যে এটিও একটি উল্লেখযোগ্য কারণ, বলেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক।
জানতে চাইলে রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য শফিকুর রহমান বাদশা জানান, বিষয়টি নিয়ে নিয়ে তিনি এরই মধ্যে রেল মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছেন। সেখানে রাজশাহীতে একটি ঈদ স্পেশাল ট্রেন দেওয়ার জন্যও বলেছেন। এখন দেখা যাক তারা কী করেন। তার চেষ্টা অব্যাহত আছে।
এর আগে গত ১৩ মার্চ রেলভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন ঈদে ৮ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্তের কথা জানান রেলওয়ের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সরদার শাহাদাত আলী। সিদ্ধান্তনুযায়ী ট্রেনগুলো চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, দেওয়ানগঞ্জ, ময়মনসিংহ, ভৈরব বাজার, কিশোরগঞ্জ ও চিলাহাটি রুটে চলবে। এছাড়া অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য ২৪৮টি (পূর্বাঞ্চল ১৩২টি ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে ১১৬ টি) লোকোমোটিভ ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে।