• ঢাকা, বাংলাদেশ রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম
রাজশাহীর বাসচালক হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা নান্টুসহ গ্রেপ্তার দুই অভ্যন্তরীণ অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে গণমাধ্যম সংলাপ অনুষ্ঠিত গোদাগাড়ী স্কুলের এসএসসি ৯৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা রামেক ছাত্রদলের সভাপতি নূর, সম্পাদক রীমন রাজশাহীতে ইলেকট্রিক বাইক আনল রিভো বাংলাদেশ রংপুর বিভাগীয় সমিতির সভাপতি ডা. মতিউল, সম্পাদক সাংবাদিক সাজু রাজশাহীর নিউমার্কেটের আগুনে পোড়া ১২ দোকানীকে রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ ও বাপার সহায়তা রাজশাহীতে ৫ রত্নগর্ভা মাকে ও দুই সংগ্রামী নারীকে সম্মাননা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা, দেড় লাখ ছাড়ালো ভরি রাজশাহীতে নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ছেই, ৫৭ শতাংশই রাজশাহীর
নোটিশ
রাজশাহীতে আমরাই প্রথম পূর্ণঙ্গ ই-পেপারে। ভিজিট করুন epaper.rajshahisangbad.com

পেঁয়াজের সাদা ফুলে সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে ‘কালো সোনা’

আত্রাই প্রতিনিধি
সর্বশেষ: বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪

সবুজ কান্ডের ডগায় কদমের মতো দেখতে সাদা সাদা ফুলে ভরে গেছে উত্তর জনপদের ধানের রাজ্য খ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলার মিরাপুর ফসলের মাঠ। যা প্রকৃতির মায়াজালে আবৃত্ত এক অনন্য দৃশ্য, যেখানে সাদা ফুলের সমারোহ নয়, বরং এক অপার সম্পদের আহ্বান।

এই ফুলের প্রশান্ত সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে ‘কালো সোনা’, যা বাংলাদেশের কৃষকদের অর্থনীতিতে এক অপূর্ব সংযোজন। পেঁয়াজের বীজের উচ্চ বাজার মূল্যের কারণে কৃষি জগতে ‘কালো সোনা’ নামে পরিচিত। যেখানে কৃষকের পরিশ্রম ও প্রকৃতির সমন্বয়ে সৃষ্টি হয় এই অমূল্য ‘কালো সোনা’।

উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের পূর্বমিরাপুর, মিরাপুর, হাতিয়াপাড়া ও তারাটিয়া গ্রামে চাষ করা হয়েছে পেঁয়াজের বীজ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর পেঁয়াজ বীজের সঙ্গে সম্পৃক্ত কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।

চাষিরা বলছেন, এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় খরচ বাদে এই পেয়াজের বীজ চাষে লাভ হবে দ্বিগুণেরও বেশি, তাই এগুলো ‘কালো সোনা’ নামে খ্যাতি পেয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলার মিরাপুর, হাতিয়াপাড়া ও তারাটিয়া মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাঠে মাঠে এখন শোভা পাচ্ছে পেঁয়াজ বীজের সাদা ফুল। শেষ সময়ের পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষিরা। অনেকে আবার পেঁয়াজ বীজের গাছে শক্তি যোগানোর জন্য কীটনাশক স্প্রে করছেন। মৌমাছি সংকট থাকায় অনেক কৃষক আবার হাত দিয়েই পেঁয়াজ ফুলের ‘মধু ফেলা’র কাজ করছেন। এখন পর্যন্ত রোপন করা পেঁয়াজ বীজ গাছের ফলন ভালো হওয়ায় লাভের স্বপ্ন বুনছেন তারা।

উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের পূর্বমিরাপুর গ্রামের কৃষক সাদ্দাম হোসেন জানান, গত বছর পেঁয়াজ বীজের দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর আগ্রহ নিয়ে বেশি জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করেছি। তিনি আরো বলেন, “এই এলাকায় আমিই প্রথম দানা চাষ শুরু করি। এই ফসল চাষে যা খরচ হয় তার থেকে দ্বিগুণ লাভ থাকে। বর্তমানে আমার দেখাদেখি এলাকার অনেক কৃষকই এই ফসলের চাষ করছে।” ছেলে-মেয়েকে লেখা-পড়ার খরচ চালাচ্ছি, আল্লাহর রহমতে এই ক্ষেত করে আমি ভালো আছি।”

ফুলবাড়ি গ্রামের কৃষক মো. আব্দুর রহিম বলেন, আমি দীর্ঘ দিন যাবৎ পেঁয়াজ বীজের আবাদ করে থাকি। এই ফসল চাষ করে লাভবান হয়েছি। এ বছর ১বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করেছি।

শাহাগোলা ইউনিয়নের হাতিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক মো. উজ্জল হোসেন বলেন, এ বছর দেড় বিঘা জমিতে আমি পেঁয়াজ বীজ চাষ করেছি। ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছি। বিভিন্ন রোগবালাইয়ের জন্য কীটনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে দেড় লাখ টাকার ওপরে বীজ বিক্রির আশা করছেন তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের তারাটিয়া ব্ল¬কের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান জনান, উপজেলায় চলতি অর্থবছওে ২১৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, এ বছর পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা ছাড়িয়ে যাবে। এছাড়া আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষকরা যাতে বাণিজ্যিকভাবে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন করতে পারেন, এজন্য উপজেলা কৃষি অফিস বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ থেকে বাজারজাত করা পর্যন্ত পরামর্শের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, পিঁয়াজের বীজ চাষে কৃষকরা যাতে লাভবান হতে পারেন এবং কৃষকরা যেন পিঁয়াজ চাষে কোনো প্রকার সমস্যায় না পড়েন এ জন্য আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি। যেখানেই সমস্যা সেখানেই আমাদের উপস্থিতি এবং সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। পিঁয়াজ চাষে যুক্ত উপজেলার কৃষকরা এবার বেশ উৎফুল্ল। কারণ তারা প্রাকৃতিক অনুকূল পরিবেশের জন্য এবার উৎপাদিত ফসলের ফলন ও দাম বেশ ভালো পাবেন বলে তিনি মনে করছেন।


আরো খবর