আপনি যদি ভেতর থেকে সুস্থ থাকতে চান তবে অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। একটি সুস্থ অন্ত্র ভালো হজম, ভিটামিন ও খনিজ শোষণ এবং ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষায় সাহায্য করে। অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম শব্দটি অন্ত্রে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়াকে বোঝায়। জার্নাল নিউট্রিয়েন্টস অনুসারে, প্রতিটি ব্যক্তির পরিপাকতন্ত্রে ২০০টিরও বেশি স্বতন্ত্র ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাক থাকে। পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আপনাকে করতে হবে এই কাজগুলো-
১. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেছে নিন
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্ট করে এবং তাদের বৈচিত্র্য বৃদ্ধি করে। পর্যাপ্ত ফাইবার গ্রহণ নিশ্চিত করতে আপনার খাবারে ফল, শাক-সবজি, লেবু, বাদাম এবং দানাশস্য অন্তর্ভুক্ত করুন। বাদাম খাদ্যতালিকাগত ফাইবারের একটি ভালোল উৎস হওয়ায় সহজেই আপনার খাদ্যতালিকায় যোগ করা যেতে পারে। নাস্তায় কাঁচা বাদাম খেতে পারেন, অথবা সালাদ বা ওটমিলে যোগ করেও খেতে পারেন। বাদাম আপনার ফাইবার গ্রহণকে বাড়িয়ে তোলে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে।
২. প্রোবায়োটিক
গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিতে থেরাপিউটিক অ্যাডভান্সেস অনুসারে, প্রোবায়োটিক খাবার খেলে তা স্বাস্থ্যকর অন্ত্র বজায় রাখতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে এটি অন্ত্রের প্রদাহ এবং অন্যান্য অন্ত্রের সমস্যা এড়াতে পারে। প্রোবায়োটিক হলো জীবন্ত অণুজীব যা পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়া হলে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এই উপকারী ব্যাকটেরিয়া সুষম অন্ত্রের মাইক্রোবায়োটা বজায় রাখে এবং হজমের স্বাস্থ্য উন্নত করে। দই, বাটার মিল্ক, ফার্মেন্টেড রাইস ডিশ, কিমচি, স্যুরক্রাউট এবং ফার্মেন্টেড আচারের মতো খাবারে অন্ত্র-বান্ধব ব্যাকটেরিয়া থাকে যা আপনার অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে।
৩. প্রিবায়োটিক
প্রিবায়োটিক খাবার উপকারী অণুজীবের জন্য খাদ্য হিসাবে কাজ করে, তাদের বৃদ্ধি এবং অন্ত্রে বিস্তারে সহায়তা করে। আপনার খাদ্যতালিকায় প্রিবায়োটিক খাবার যেমন রসুন, পেঁয়াজ, অ্যাসপারাগাস, কাঁচা কলা, ফ্ল্যাক্সসিড, লেগুম, আপেল এবং এ জাতীয় খাবার যোগ করুন। এতে স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম তৈরি করা সহজ হবে। এই খাবারগুলো হজমের স্বাস্থ্য এবং সামগ্রিক সুস্থতায় সাহায্য করে।
মন ও অন্ত্রের সংযোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ চাপ এবং মানসিক সুস্থতা অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। হজম এবং পুষ্টির শোষণকে অপ্টিমাইজ করার জন্য খাবারের সময় মনোযোগী হয়ে খান। আপনার দৈনন্দিন রুটিনে ধ্যান, গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বা ইয়োগার মতো স্ট্রেস-কমানোর কৌশল যোগ করুন যা অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে সাহায্য করে।
৫. হাইড্রেটেড থাকুন এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার সীমিত করুন
পর্যাপ্ত হাইড্রেশন সর্বোত্তম হজম এবং সামগ্রিক অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্ত্রের কার্যকারিতা এবং পুষ্টির পরিবহন বাড়াতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। প্রতিদিন আট গ্লাস পানি পানের লক্ষ্য রাখুন এবং চিনিযুক্ত পানীয় কম পান করুন। প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া কমিয়ে দিন। এর পরিবর্তে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার বেছে নিন।