নিজস্ব প্রতিবেদক
দেড় শতাধিক পদের বাহারি নকশি পিঠায় জমে উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শৈত্যোৎসব ও পিঠা-পুলি মেলা ১৪৩০। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সুরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্রশিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (টিএসসিসি) সামনে এ মেলা শুরু হয়। একই সঙ্গে রয়েছে নাচ-গান-আনন্দ-উল্লাস, আবৃত্তি, বিতর্কসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজন।
দুই দিনব্যাপী শৈত্যোৎসব ও পিঠা-পুলি মেলা বৃহস্পতিবার শুরু হয়ে চলবে শুক্রবার রাত পর্যন্ত। ‘শীতের আমেজে পিঠার গন্ধে, বাউল মাতে মন-আনন্দে’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাউলিয়ানার আয়োজনে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ পিঠা-পুলির উৎসব।
মেলায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দেশি-বিদেশি প্রায় দেড় শতাধিক পদের পিঠা নিয়ে প্রায় অর্ধ শতাধিক স্টল নিয়ে বসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পিঠার পাশাপাশি স্টলের নামগুলোর মধ্যেও রয়েছে বৈচিত্র্যময়তা। এর মধ্যে শশুরবাড়ি পুলির আসর, পিঠা খাবি কি না বল, হ য ব র ল, স্বপ্ন ঘুড়ি, খাই দাই পিঠা ঘর, হৃদয় হরণ পিঠা, রসমঞ্জুরী, পিঠা ওয়ালী, পিঠা মহল, সরদার মার্ট, চন্দ্রপুলি, বিহান কুঞ্জ, হাউ মাউ পিঠা খাও, রাণী পিঠা ঘর, মাসুম আলির পিঠা, শৈত্যপুলিসহ আরও বিভিন্ন বাহারি নাম নজর কেড়েছে।
স্টলগুলোতে স্থান পেয়েছে বাহারি পদের পিঠা। যার মধ্যে দুধপুলি, চন্দ্র পুলি, নারকেল পুলি, খোলা চিতই, তেল পিঠা, নকশী পিঠা, মালাই বিহার, সুজির বড়া, জামাই পিঠা, পাটি সাপটা, গোলাপ ফুল, ডাবের পিঠা, লবঙ্গ পিঠা, শামুক পিঠা, রুপালি পিঠা, বুটের বরফি, মোহন ভোগ, ডিম সুন্দরী, মাছের পিঠা, গাজরের হালুয়া ডিমপুরি, গোলাপ, আরশি নগর, ঝাল-মিষ্টি, হৃদয়হরণ পিঠা, সূর্যমুখী, পাকোয়ান পিঠা, শামুক পিঠা, লবঙ্গ লতিকা, রসে ভরা সবজি পিঠা, রস মলাই খিরপুলির প্রশংসা সবার মুখে মুখে। বাহারি পদের এসব পিঠা খেতে শিক্ষার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ১০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পিঠা।
কথা হয় ‘শশুরবাড়ি পুলির আসর’ স্টলের উদ্যাক্তোদের সঙ্গে। তারা জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পিঠা উৎসব খুবই জমজমাট হয়ে থাকে। এখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শীতের পিঠা খাওয়ার পাশাপাশি দারুণ সময় কাটান। এবছর শখের বসে বন্ধু-বান্ধবীরা মিলে স্টল নিয়েছেন তারা। আনন্দের সাথে সবাই মিলে পিঠা বানানো, স্টলে বসে বিক্রি করা, সবার সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে অনবদ্য সময় অতিবাহিত হচ্ছে তাদের। এছাড়া পিঠা বিক্রির যে লভ্যাংশ থাকবে তা থেকে অসহায় মানুষের সাহায্যের জন্য ব্যয় করবেন তারা।
পিঠা পুলি উৎসবে আসা ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বাপ্পি বলেন, এ শীতে মায়ের হাতের পিঠা খুব মিস করছি। ক্যাম্পাসে বসে শীতের পিঠা-পুলি উৎসবের আয়োজনের জন্য ক্যাম্পাস বাউলিয়ানাকে ধন্যবাদ। যারা স্টল নিয়ে বসেছে তাদের পিঠার মানও খুবই ভালো। বিভিন্ন ধরনের পিঠা এখানে রয়েছে। কয়েক রকম পিঠা খেয়েছি। তবে দাম কিছুটা বেশি। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক আড্ডাও উপভোগ করছি বলে জানান তিনি।
এ বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের গ্রাম-বাংলার সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে ক্যাম্পাস বাউলিয়ানা গতবছরের ন্যায় এবারও পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে যতটুকু সহযোগিতা করার প্রয়োজন আমরা ততটুকু করেছি। এমন আয়োজন করলে আমরা প্রশাসন থেকে যথাসাধ্য সহযোগিতার হাত বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।