• ঢাকা, বাংলাদেশ শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩২ অপরাহ্ন
নোটিশ
রাজশাহীতে আমরাই প্রথম পূর্ণঙ্গ ই-পেপারে। ভিজিট করুন epaper.rajshahisangbad.com

ভোটের শুরতেই তিন নারী প্রার্থীর মধ্যে দুই প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল

রিপোর্টার নাম:
সর্বশেষ: সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩
ভোটের শুরতেই তিন নারী প্রার্থীর মধ্যে দুই প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল
মনোনয়ন বাতিল হওয়া দুই নারী নেত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহীর মনোনয়ন যুদ্ধে অনেক নারীই এগিয়ে ছিলেন। রাজশাহী থেকে শুধুমাত্র আওয়ামীলীগেরই দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন প্রায় ১০ জন। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের কারো কপালেই মনোনয়ন জোটেনি। দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে অনেকেই আর সতন্ত্র প্রার্থী হয় নি। তবে রাজশাহী এক আসনেই প্রার্থী হয়েছিলেন তিন নারী। ভোট যুদ্ধে না যেতেই এরই মধ্যে বাতিল হয়েছে দুই নারীর প্রর্থীতা। এক মাত্র নারী প্রার্থীরও তেমন নাম প্রচার নেই। ফলে বলা যায় ভোটের আগেই ছিটকে পড়েছেন আলোচিত নারী নেত্রীরা। বাদপাড়া এই দুই নারী প্রার্থীরা একজন হলেন, রাজশাহী- ১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের প্রার্থী চলচিত্রের নায়িকা শারমিন আক্তার নিপা ওরফে মাহিয়া মাহি আরেকজন শাহনেয়াজ আয়েশা আক্তার জাহান ডালিয়া। তারা দুইজনই ছিলেন বেশ আলোচনায়। বর্তমানে এই আসনে এক মাত্র নারী প্রার্থী এনপিপির নুরুনন্নেসা। তবে তার তেমন পরিচয় জানেন না এলাকাবাসী। নারী নেত্রীরা বলছেন, শুধুমাত্র ১শতাংশ ভোটারের সাক্ষরের কারণেই তাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এটি তাদেরে প্রার্থীতার জন্য প্রধান বাধা হয়ে দাড়াছে।
শারমিন আক্তার নিপা ওরফে মাহিয়া মাহি বলেন, এখানে নারীদের বাধা এরকম কিছুই না, শুনলে কষ্ট লাগে। ১ শতাংশ স্বাক্ষর নিয়ে যে জটিলতা, তথ্যের মধ্যে কিছু গড়মিল থাকে, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে যে বিষয়টি আসছে সেটার মধ্যেও গড়মিল আছে। আমরা যখন সাইন নিয়েছি সেটা নিশ্চিত, যারা সাইন করেছে তারাও জানে। আমরা এখন আপিল করবো, আশা করছি তারা এটা গুরুত্ব দিবে এবং আমাকে নির্বাচনের সুযোগ দিবে।
এই আসনের আরেক প্রার্থী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী শাহনেয়াজ আয়েশা আক্তার জাহান ডালিয়া বলেন, আপিলের যেহেতু সুযোগ আছে সেটা নিয়েই কাজ করছি। গ্রামের মানুষ তো ওভাবে জানে না, শিক্ষিতও না, একেক বার একেকভাবে লিখে। পুরো প্রসেসটাই একটা বিশাল কর্মযজ্ঞের প্রসেস, এটা কেন রেখেছে সেটাই জানি না। ৫ হাজার লোকের সিগনেচার নেওয়া এতো সহজও নয়। এত বড় একটা কাজ একদিন-দুদিনের মধ্যে শেষ করা কঠিন ব্যাপার।
তিনি বলেন, আমার যেটা মনে হয়, কোনো প্রার্থীকে বাদ দিতে চাইলে কোথাও থামুক আর না থামুক এই ১ শতাংশ সিগনেচারে থামানো যাবে। ওই আসনে এখন একজন নারী আছে মাত্র, অথচ কেউই চিনে না তাকে। যেহেতু কেউ চেনে না তাই রাখা যায়, সেটা ওই এমপির প্রতিনিধিও হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, নারীদের জন্য সব জায়গায় বাধা হয়ে আছে। আমাদের সমাজটা পুরুষতান্ত্রিক সমাজ। তারা সবসময় নিজেরাই নেতৃত্বে থাকতে চায়। আমি তানোর-গোদাগাড়ীতে জনপ্রিয় একজন মানুষ, তারপরও তারা আমাকে বাধা দিয়েছে। অবশ্যই এটা ষড়যন্ত্র।
রাজশাহী জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসরিন আক্তার মিতা বলেন, এখানে তো নারী বলে আলাদা করে সুবিধা দেওয়ার সুযোগ নাই। নির্বাচনের যে আইন আছে সেটার ভেতরেই তো থাকতে হবে। তাই নারীদের সুযোগ দেওয়ার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার তো পক্ষপাত করার সুযোগ নাই। আমরা স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়ানোর জন্য মনোনয়ন সাবমিট করছিলাম। কিন্তু বিধি অনুযায়ী মোট জনসংখ্যার এক শতাংশ স্বাক্ষর সম্বলিত জমা দিতে হবে, এটা তো সো টাফ। এটা বাদ দেওয়া গেলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য সুবিধা হবে। একজন নতুন প্রার্থী এত অল্প সময়ে ৩ হাজার ৬০৭ জনের স্বাক্ষর নিয়ে জমা দেওয়াটা অনেকেই সঠিকভাবে করতে পারে নি।
তিনি দাবি করেন, আমাদের ৬টি আসনের মধ্যে অন্তত একটা আসনে নারীকে দলীয় মনোনয়ন দিলে খুশী হতাম। প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি করে আসনে নারীকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
তবে রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রোকসানা মেহবুব চপলা বলেন, পুরুষের সম পর্যায়ে যদি না-ই হতে পারি তবে কেন নির্বাচনে যাবো আমি। আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চাইছিলাম, অফারও আসছিল, পলিটিক্যাল কারণে হই নি। আমার পক্ষে কোনো ব্যাপার ছিল না এই স্বাক্ষরটা নেওয়া, একদিনের মধ্যে হলেও নিতে পারবো। কারণ আমি তৃণমূল থেকে উঠে এসেছি, ছাত্রীজীবন থেকে রাজনীতি করে আসছি। হঠাৎ করে এসে এমপি হবো, রাজনীতির একটা অংশ হবো এটা হয় না। মাহি আর ডালিয়ার ব্যাপারে এরকমটাই হয়েছে, হঠাৎ করে এসে তারা অনেক কিছু পেতে চায়।
তিনি বলেন, নারী সরাসরি নির্বাচনে আসুক, এটা কোনো পুরুষতান্ত্রিক সমাজ চায় না। কিন্তু আমরা যারা ওভারকাম করবো বলে মনে করেছি, তারা কিন্তু হয়েই গেছি।


আরো খবর