বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তিনি সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্ত হন। তিনি মুক্তি পেয়েই তার তিন বছরের শিশুকন্যা ফাতেমাকে বুকে জড়িয়ে নেন।
খালেদা পারভীন বলেন, ঈদের একটা দিন মেয়েকে ছাড়া আমি জেলখানায় কাটিয়েছি। আমি বুঝেছি আর আমার মেয়ে বুঝেছে আমাদের কেমন লেগেছে। এ সময় চাপা কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
এর আগে বেসরকারি সংস্থা উদ্দীপণের দায়ের করা মামলায় বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায় খালেদাকে।
ঈদের আগের দিন শিশুকন্যাকে রেখে খালেদা পারভীনের জেলহাজতে যাওয়ার সংবাদটি বাংলানিউজসহ বেশ কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। এক ব্যক্তি ওই ঋণের টাকা পরিশোধ করেন। অপর একটি সংস্থা ওই পরিবারকে অটোভ্যানগাড়ি তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
অপরদিকে বেলকুচির তামাইয়ের এক ব্যক্তি সেলাই মেশিন কিনে দেওয়ার আশ্বাস দেন। খালেদা মুক্তি পাওয়ার পর নারায়ণগঞ্জের এক ব্যক্তি তাকে নগদ অর্থ দিয়ে সহায়তা করেন।
এদিকে খালেদার স্বামী ইব্রাহিম বলেন, আমরা দরিদ্র। দুটি মেয়ের বিয়ে দেওয়ার পর ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। আরও ৫০/৬০ হাজার টাকা ঋণ আছে। সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর অনেকেই আমাদের সহায়তা করেছেন। এজন্য সাংবাদিক ও তাদের ধন্যবাদ দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বেসরকারি সংস্থা উদ্দীপণ থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন খালেদা পারভীন (৪২)।
ঋণের বেশকিছু টাকা পরিশোধ করলেও অভাবের তাড়নায় ১১ হাজার ২০০ টাকা বাকি ছিল।
এদিকে দারিদ্রতা থেকে মুক্তি পেতে ছয় মাস আগে স্বামীসহ ঢাকার পোশাক কারখানায় চাকরি নেন তিনি। আর ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় উদ্দীপন এনজিও তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করে। মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও বিষয়টি জানতেন না খালেদা। ঈদের আগের দিন ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে এলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়।