মার্কিন সামরিক সহায়তার অভাবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার জয়ের আশঙ্কা দেখছেন। তার মতে, মার্কিন কংগ্রেস সেই সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন না করলে রাশিয়া আরও জমি দখল করতে পারে।
যুদ্ধক্ষেত্রে গোলাবারুদ ও অস্ত্রের অভাবে ইউক্রেন পরাজয়ের মুখ দেখতে পারে বলে মনে করছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রোববার তিনি বলেছেন, মার্কিন কংগ্রেসে সামরিক সহায়তার প্যাকেজ আটকে থাকায় রাশিয়ার পক্ষে আরও জমি দখল সহজ হয়ে উঠছে বলে তিনি সতর্ক করে দেন।
এক ভিডিও বার্তায় তিনি নির্দিষ্টভাবে মার্কিন কংগ্রেসের কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার আর্জি জানান। তার মতে, সেই সহায়তা ছাড়া ইউক্রেনের পক্ষে টিকে থাকা সহজ হবে না।
গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার হামলা সত্ত্বেও ইউক্রেন প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের প্রায় এক পঞ্চমাংশ দখল করতে সক্ষম হলেও রাশিয়া সাম্প্রতিককালে নতুন করে বেশি জমি দখল করতে পারেনি। কিন্তু এবার নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে চারসিভ ইয়ার নামের এলাকা সে দেশের হাতে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ শহর ক্রামাটর্স্ক নামের শহরের ৩০ কিলোমিটারেরও কম দূরে অবস্থিত সেই এলাকা হাতছাড়া হলে ইউক্রেন কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়বে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। রাশিয়া সেই এলাকার ওপর ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে সেনাবাহিনী জানিয়েছে।
চারসিভ ইয়ারের বাইরে দুটি ছোট শহরের ওপর সরাসরি হামলা চলছে। উত্তর পূর্বে খারকিভ শহরেও রাশিয়ার হামলা বাড়ছে। আকাশপথে হামলা প্রতিরোধ করার জন্য যথেষ্ট এয়ার ডিফেন্স সরঞ্জামের অভাবের কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে বলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট দাবি করেন।
অন্যদিকে, রাশিয়ার ভূখণ্ডে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা বেড়ে গেছে। রাশিয়া অবশ্য বেলগোরোদ ও ব্রিয়ানস্ক অঞ্চলে ১৫টি ড্রোন হামলা বানচাল করেছে বলে দাবি করেছে। বিচ্ছিন্ন হামলার মাধ্যমে ইউক্রেন কিছু সাফল্য পেলেও সার্বিকভাবে রাশিয়ার হামলার মাত্রা কমাতে সক্ষম হচ্ছে না।
ইস্টারের বিরতির পর চলতি সপ্তাহে মার্কিন কংগ্রেসের অধিবেশন আবার শুরু হচ্ছে। সিনেটের অনুমোদন সত্ত্বেও নিম্ন কক্ষে এখনও ইউক্রেন, ইসরায়েল ও তাইওয়ানের জন্য সামরিক প্যাকেজ পেশ করা হয়নি। চলতি সপ্তাহে সে ক্ষেত্রে অগ্রগতিরও কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মার্কিন অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জটিলতার কারণে রিপাবলিকান দলের একাংশ ইউক্রেনের জন্য সহায়তার তুমুল বিরোধিতা করছে। তবে দলের বাকি অংশ এমন প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে স্পিকার মাইক জনসন নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।