রাজশাহীতে এবার ঈদ-উল-ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে হযরত শাহ মখদুম (রহ.) কেন্দ্রীয় ঈদগাহে সকাল ৮টায়। তবে বৃষ্টি হলে বা আবহাওয়া প্রতিকূল থাকলে একই সময় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে হযরত শাহ মখদুম (রহ.) দরগা জামে মসজিদে।
আর সেই ক্ষেত্রে মুসল্লির সংখ্যা বেশি হলে ৪৫ মিনিটের ব্যবধানে দরগা মসজিদে পর পর ঈদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী জামিয়া ইসলামীয়া শাহ মখদুম (রহ.) মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মুফতি আবদুল খালেক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ঈদ জামাত সম্পর্কে জানতে চাইলে- মুফতি আবদুল খালেক বলেন, এবার কেন্দ্রীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করার কথা রয়েছে- রাজশাহী শাহ মখুদম কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহর। তবে শেষ মুহূর্তে পরিবর্তনও হতে পারে। কারণ মহানগরীর হেতমখাঁ বড় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা ইয়াকুব আলী অসুস্থ। মুফতি শাহাদাত আলীর মৃত্যুর পর মুফতি ইয়াকুব আলীই প্রধান জামাতে ইমামতি করতেন। তিনি অসুস্থ থাকায় এবার তাই ঈদ জামাতে আরও ২/৩ জনের নাম জেলা প্রশাসক বরাবর প্রস্তাব করা হয়েছে।
তবে সেখান থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও আসেনি। এদিকে রাজশাহীতে ঈদের দ্বিতীয় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৭টায় মহানগর ঈদগাহে (টিকাপাড়া)। এখানে ঈদের দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়। বৃষ্টি হলে একই সময়ে পাশেই থাকা টিকাপাড়া মোহাম্মপুর জামে মসজিদ কমপ্লেক্সে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া সকাল ৮টায় মহানগরীর তৃতীয় বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে বড় মসজিদ সংলগ্ন সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে। এখানে প্রধান সড়কের ওপর একটিই ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সকাল ৮টায় এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদে ঈদ-উল-ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। ইসলামিক ফাউন্ডেশন রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম জানান, সুুষ্ঠুভাবে ঈদ-উল-ফিতরের প্রধান জামাত আয়োজনের জন্য এরই মধ্যে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট ওলামায়েকরামদের নিয়ে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বলে দেওয়া হয়েছে- সংশ্লিষ্ট মসজিদ কমিটিই বরাবরের মত আলোচনা করে নিজ নিজ ঈদগাহের ঈদ জামাতের সময়সূচি নির্ধারণ করবেন। তাই ইসলামিক ফাউন্ডেশন বা রাজশাহী জেলা প্রশাসন এবারও ঈদের নামাজের সময়সূচি নির্ধারণ করে দেয়নি। নিজ এলাকায় থাকা মসজিদ কমিটি তাদের সুবিধামত ঈদ জামাতের সময় নির্ধারণ করবেন।ঈদের আগের দিন তা মাইকিং করে জানিয়ে দেবে।
তবে সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যেই বেশিরভাগ ঈদগাহ ও মসজিদে ঈদ-উল-ফিতরের নামাজ হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এদিকে, মঙ্গলবার সরকারি এক তথ্যবিবরণীতে বলা হয়েছে- যথাযোগ্য মর্যাদা ও আনন্দমুখর পরিবেশে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উদযাপনের লক্ষ্যে এবার ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। সেই অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় ঈদের দিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ৮টায় মহানগরীর হযরত শাহ খদুম (রহ.) কেন্দ্রীয় ইদগাহ ময়দানে ইদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
কেন্দ্রীয় ইদগাহে জামাত অনুষ্ঠানের পর রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ উপস্থিত মুসল্লিদের সঙ্গে ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। এদিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার, এতিমখানা, শিশুকেন্দ্র, শিশুপরিবার, শিশুপল্লী, শিশুসদন, ছোটমণি নিবাস, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, সেফ হোম এবং অনুরূপ প্রতিষ্ঠানসমূহে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। এছাড়া এদিন সরকারি ভবন ও সড়কসমূহ বিশেষভাবে সজ্জিত থাকবে।