বাঘায় পুড়িয়ে দেয়া হলো পুলিশের প্রাইভেট কার
নিজস্ব প্রতিবেদক
সকাল থেকে রাজশাহী শহরে হরতালের সমর্থনে কাউকে মাঠে দেখা যায়নি। তবে, নগরীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা বিক্ষোভ করেছে। স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় হরতালের তেমন প্রভাব পড়েনি। তবে সবখানেই আলোচনা ছিলো হরতাল ঘিরেই। এদিকে, রাজশাহী শহরে অনাকাঙ্খিত কোন ঘটনা না ঘটলেও রাজশাহীর বাঘায় এক পুলিশ সদস্যের ব্যাক্তিগত গাড়িতে আগুন জ¦ালিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুবৃত্তরা। তবে, কে বা কারা এই আগুন ধরিয়েছে তা এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।
রাজশাহী থেকে রোববার সকাল থেকেই বিভিন্ন রুটে যাস চলাচল করেছে। তবে এই সংখ্যা ছিলো অন্য দিনের তুলনায় কম। বিশেষ করে দুরপাল্লা ও আন্তজেলা রুটে বাস চলাচলের সংখ্যা অনেক কম ছিলো। আবার যেসব বাস চলেছে সেগুলোতে যাত্রীর সংখ্যাও কম ছিলো। তবে, শহরে রিকশা ও অটো রিকশা চলাচল করেছে অন্যান্য দিনের মতই। শহরের বেশিরভাগ দোকানপাটই খোলা ছিলো। তবে, সাহেববাজার এলাকার বড় কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিলো।
সকাল থেকে কোথাও মাঠে দেখা যায়নি বিএনপি-জামায়াত নেতা কর্মীদের। তবে, সকালে শহরের খড়খড়ি এলাকায় হরতালের সমর্থনে কয়েকজনে ঝটিকা বিক্ষোভ করে পালিয়ে যায়। অন্যদিকে, নগরীর সাহেববাজার, লক্ষীপুরসহ বেশ কয়েটি স্থানে অবস্থান নিয়ে হরতাল বিরোধী বিক্ষোভ করেছে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা।
সকাল থেকে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে পুলিশ অবস্থান নেয়। মহানগর পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তারা মাঠ পরিদর্শন করেছেন। মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বিজয় বসাক জানান, সার্বিক পরিস্থিতি স্বভাবিক ও শান্তিপূর্ন রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। পোশাকি পুলিশের পাশাপিাশি সাদা পোশাকেও পুলিশ সদস্যরা মাঠে রয়েছে।
এদিকে, শনিবার থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত রাজশাহী নগরীতে ৭০ জন বিএনপি জামায়াত নেতা কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার জামিলুর রহমান জানান, মুলত নাশকতা করতে পারে এমন তথ্যের ভিত্তিতেই তাদের আটক করা হয়েছে।
বাঘায় জ¦ালিয়ে দেয়া হলো পুলিশের প্রাইভেট কার
বাঘা প্রতিনিধি জানান, বাঘায় হরতাল চলাকালে এক পুলিশ সদস্যের ব্যাক্তিগত একটি প্রাইভেট কারে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুবৃত্তরা। রোববার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের (চারঘাট-বাঘা) সড়কের আটঘরি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা, থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের দল ঘটনাস্থলে যায়। তবে কে বা কারা আগুন দিয়েছে তাৎক্ষনিক তা জানা যায়নি।
জানা যায়, প্রাইভেট কারটি চালিয়ে বাঘায় স্ত্রীর বড় বোনকে রাখতে যাচ্ছিলেন পুলিশ সার্জেন্ট শহিদুজ্জামান রিপন। রাজশাহী মহানগর পুলিশে কর্মরত তিনি। বর্তমানে প্রেষণে সারদা পুলিশ একাডেমিতে রয়েছেন। তিনি বলেন, রোববার সকাল ১১টার দিকে ঘটনাস্থল এলাকায় পৌঁছলে ১৫/২০ জন পিকেটারের একটি দল গতিরোধ করে প্রথমে লাঠি দিয়ে প্রাইভেট কারে আঘাত করে। এ সময় আত্নরক্ষায় তারা গাড়ি থেকে নেমে দুরে চলে যান। এর পরই কারের ভেতরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যায় দুর্বৃত্তরা।
স্থানীয়রা জানায়, গাড়িটিতে দাউদাউ করে আগুন জ¦লতে জ¦লতে এক পর্যায়ে সেটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়ে যায়।
স্থানীয় জহুরুল ইসলাম জানান, বাড়ি থেকে বিকট শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন দেখতে পাই। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে গাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন।
বাঘা ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মিজানুর রহমান বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণ করার আগেই কারটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। পরে প্রাইভেট কারটি অবশিষ্ট অংশ সড়ক থেকে অপসরণ করা হয়েছে।
বাঘা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সবুজ রানা বলেন, ঘটনা তদন্তের পরে বলা যাবে কারা এই অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িত। তাৎক্ষনিক কাউকে আটক করা হয়নি। তদন্ত করে জড়িতদের সনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।