রাবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঘটনার দিন শিক্ষার্থীদের হাতে প্রাণঘাতী অস্ত্রপ্রদর্শিত হলেও একটিও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পুলিশ বলছে, বিষয়টি নিয়ে তারা কাজ করছে । তবে, বাম সংগঠনের নেতাদের অভিযোগ, রাবি প্রশাসনের নমনীয়তায় ক্যাম্পাসে এমন পরিস্থিতি।
গেল ১২ মে শনিবার রাতে সোহরাওর্য়াদি হলে গেস্ট রুমে বসাকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে রাজশাহী বিশ^বিদ্যায়ের ছাত্রলীগের দুই পক্ষ। এক পর্যায়ে দুই গ্রুপের সমর্থকরা শতাধিক রামদা, চাপাতি, রোডসহ দেশীও অস্ত্র নিয়ে শোডাউন দেয়। মুহুর্ত্তে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো ক্যাম্পাস। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা চলে মধ্যরাত অবধি। এরপর থেকেই ক্যাম্পাস জুড়ে বিরাজ করছে থমথমে পরিবেশ। সর্বশেষ গতকাল রাতেও সোহরাওয়ার্দী হলে ছাত্রলীগ নেতা নিয়াজ প্রবেশ করলে। হঠাৎ করে হল ঘেরাও করে ছাত্রলীগের অপর পক্ষের নেতা কর্মীরা। প্রত্যেকের হাতে দেশীয় অস্ত্র। প্রকাশ্যে মহড়া চলে। বিভিন্ন হল থেকে অস্ত্র নিয়ে সোহরাওয়ার্দী হলের দিকে যায় ছাত্রলীগের নিয়াজ বিরোধী অপরপক্ষ। তবে রাতভর অভিযান চালিয়েও কোন অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
এমন পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন সাধারন শিক্ষার্থীরা, তারা বলছে আমরা চাই ক্যাম্পাসে শিক্ষার শুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করুক। কোনো দলাদলী হানাহানি চাই না।
সাজিদ আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ চাই। ক্যাম্পাসে অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করলে আমরা আতঙ্কে থাকি এবং আমাদের পরিবারও আতঙ্কে থাকে। আমরা চাইনা আমাদের পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হোক। শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এ শিক্ষার্থী।
তবে, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, আমরা বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেছি, যারা কাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করবে, অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে যেনো ব্যবস্থা নেয়। আর ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী যেই হোক না কেনো দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সুলতান-উল-ইসলাম বলেছেন, শিক্ষার্থীদের হাতে থাকবে বই, খাতা-কলম। কিন্তু তার বদলে এই শিক্ষার্থীদের হাতে অস্ত্র বিষয়টি উদ্বেগ জনক। তবে এমন সংস্কৃতি একদিনে তৈরি হয়নি। বিভিন্ন সময় অনেকে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য শিক্ষার্থীদের বিপথে ঠেলে দিয়েছে । তবে আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। উভয় পক্ষের সাথে আলাপ হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ক্যাম্পাসে অস্ত্রের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে অবহিত করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে শিক্ষার শুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখেতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিহার জোনরে উপ-কমিশনার মধুসূদন রায় বলেন, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় আমাদের কাছে যে ভাবে সহযোগীতা চেয়েছে আমরা সেভাবে তাদের সেবা দেয়ার চেষ্টা করেছি।
তিনি বলেন, রাবি শিক্ষার্থীদের বিষয়টি স্পর্শকাতর। আমারা বিশ^বিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে কাজ করছি। কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা যেনো না ঘটে সে কারনে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের মধ্যে কোনো পুলিশি কার্যক্রম চালাতে গেলে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগে, আমরা তাদের সাথে সমন্বয় করে পুলিশি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। তবে, ক্যাম্পাসে অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে সরাসরি উত্তর না দিলেও বলেন, তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।