• ঢাকা, বাংলাদেশ শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০২:৫০ অপরাহ্ন
নোটিশ
রাজশাহীতে আমরাই প্রথম পূর্ণঙ্গ ই-পেপারে। ভিজিট করুন epaper.rajshahisangbad.com

শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের চারদিনের কর্মবিরতি ঘোষণা

রিপোর্টার নাম:
সর্বশেষ: মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্যাজার কম্পোজিশনের সুরক্ষা, পদোন্নতি, পদসৃজন, স্কেল আপগ্রেডেশন  আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনসহ বিভিন্ন দাবিতে রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী কলেজ শিক্ষক মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলন থেকে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির পক্ষ থেকে চারদিনের কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির যুগ্ম মহাসচিব প্রফেসর ড. ইলিয়াছ উদ্দিন। লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, শিক্ষার রূপান্তরের অন্যতম কারিগর বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাগণ। তারাই প্রণয়ন করেছেন নতুন শিক্ষাক্রম, এর বাস্তবায়নেও তারাই অন্যতম শক্তি। শিক্ষা ক্যাডারের ১৬ হাজার কর্মকর্তা বর্তমান সরকারের ভিশন-২০৪১ তথা স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু প্রাপ্য অধিকার ও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কোন কারণ ছাড়াই পদোন্নতি বন্ধ আছে দুই বছর। এই মূহুর্তে শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তার সংখ্যা ৭ হাজারের বেশি। এর মধ্যে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি যোগ্য ১২০০ জন। সহযোগী অধ্যাপক পদোন্নতি যোগ্য ৩০০০ জন, সহকারি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি যোগ্য কর্মকর্তা আছেন প্রায় ৩০০০ জন। এই কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য সরকারের কোন অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন নেই। সবাই পদোন্নতিযোগ্য পদের বেতন স্কেলের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে গেছেন। ক্যডার সার্ভিসে শূন্য পদ না থাকলে পদোন্নতি দেয়া যাবে না এমন কোন বিধান নেই। অথচ, শিক্ষা ক্যাডারকে শূন্য পদের অজুহাতে পদোন্নতি বঞ্চিত রাখা হয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকল ক্যাডারের জন্য সুপারনিউমারারি পদে পদোন্নতি দিয়ে ক্যাডার বৈষম্য নিরসনের নির্দেশনা দিলেও তা পালিত হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আন্তঃ ক্যাডার বৈষম্য নিরসনের নির্দেশ দিয়েছেন বারবার। কিন্তু সে নির্দেশনা মানা হচ্ছে না।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, অন্য ক্যাডারের মত শিক্ষা ক্যাডারে ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি অনুসৃত না হওয়ায় অন্যান্য ক্যাডারের তুলনায় শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাগণ পিছিয়ে আছেন। বেতন স্কেল অনুযায়ী ৪র্থ ও ৬ষ্ঠ গ্রেড প্রাপ্য কর্মকর্তাগণের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে ১ বছরপূর্বে। কিন্তু এ বিষয়েও কোনো অগ্রগতি নেই।।

বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষকও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহে জনবলের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। পূর্বের তুলনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে, শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বেড়েছে, সিলেবাস। কোর্স বেড়েছে কয়েকগুন। কিন্তু সে তুলনায়পদ সৃজন হয়নি। বর্তমান শিক্ষা ক্যাডার নিয়ন্ত্রিত সরকারি কলেজসমূহে উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা স্তরে প্রায় ৫০ লক্ষ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছে। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষকেরপদ সৃজন অপরিহার্য। অথচ বর্তমানে সরকারি কলেজসহ শিক্ষা প্রশাসনে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার সংখ্যা মাত্র ১৬ হাজার। শিক্ষার মতো এত গুরুত্বপূর্ণ একটি খাতে ১২৪৪৪ টি পদ সৃজনের প্রস্তাব আটকে আছে দীর্ঘ ৯ বছর।

সংবাদ সম্মেলন থেকে কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করে বলা হয়, শিক্ষা ক্যাডারের দাবিগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই অনেক পুরাতন। আমরা দীর্ঘদিন ধরে সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কিন্তু দাবিগুলো পূরণ হয়নি। একারণে এসব দাবি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কেন্দ্রিয় কমিটি নতুন করে কর্মসূচি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

এসমব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে  আগামী ২ অক্টোবর সারা দেশে একদিনের কর্মবিরতি পালন করা হবে। শিক্ষা ক্যাডারের ন্যায্য দাবি পূরণে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আগামী ১০, ১১ ও ১২ অক্টোবর টানা তিন দিনের কর্মবিরতি পালন করা হবে। সারাদেশের সরকারি কলেজ, সরকারি মাদ্রাসাসহ সকল দপ্তর ও অধিদপ্তরে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাগণ সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাঃ আব্দুল খালেক, নিউ গভঃ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কালাচাঁদ শীল, রাজশাহী সরকাটি সিটি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আমেনা আবেদীন, রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. জুবাইদা আয়েশা সিদ্দীকা, শহীদ বুদ্ধিজীবী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোঃ আনারুল হক প্রাং, টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শওকত আলী খান। সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সচিব মোস্তফা নাসিরুল আযম, কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য প্রদীপ কুমার মহন্ত, আব্দুস সালাম ও খালেদা ইয়াসমিনসহ রাজশাহী জেলার বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


আরো খবর