নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হওয়ার পর বিজয়ী সংসদ সদস্যরা ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন। নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তারা ফুল নিয়ে আসছেন, শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন নতুন সংসদ সদস্যকে। তবে, অনেকটা ভিন্ন চিত্র চোখে পড়ছে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদকে শুভেচ্ছা জানানোর ক্ষেত্রে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত অসংখ্য মানুষ তাকে শুভেচ্ছা জানাতে আসছেন, যাদের অনেকেই তার নির্বাচনী এলাকা পবা বা মোহনপুর উপজেলার নন। এই দুই উপজেলার বাইরে অন্য যে ৭টি উপজেলা আছে সেসব উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের দলীয় নেতা-কর্মী আসছেন শুভেচ্ছা জানাতে। পাশ^বর্তি জেলা চাপাইনবাবগঞ্জ এবং নওগাঁর অনেক নেতাকেও দেখা গেছে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে। শুভেচ্ছা জানাতে আসা নেতা কর্মীরা বলেন. আসাদুজ্জামান আসাদ আজকে সংসদ সদস্য হয়েছেন, কিন্তু তিনিতো আমাদের কাছে অনেক আগে থেকেই নেতা। তিনি তৃণমূল আওয়ামীলীলীগের কাণ্ডারী। এ অঞ্চলের এমন কোন আওয়ামীলীগ কর্মী নেই যিনি আসাদুজ্জামানকে জানেন না। কেউ কেউ বলছেন, রাজশাহীর এমন কোন উপজেলা নাই যেখানে আসাদের কয়েক হাজার করে কর্মী, সমর্থক, ভক্ত নাই। কাজেই আসাদুজ্জামান পবা-মোহনপুরের মানুষের সংসদ সদস্য হলেও আমাদের কাছে নেতা আসাদ ভাই।
রাজশাহী-৩ সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য হয়েছেন রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। তার নির্বাচনী আসন পবা ও মোহনপুর উপজেলা। ভোটে বিজয় লাভের পর থেকে অগনিত মানুষ তাকে অভিনন্দন জানাতে আসছেন। কেউ আসছেন ফুলের তোড়া, কেউ আসছেন ফুলের মালা। অনেকেই হাতে একটি/দুটি ফুল নিয়ে আসছেন। কেউবা আবার মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে আসছেন। আবার অনেক নেতা কর্মী আসছেন একেবারেই খালি হাতে। তারা এসে একবার হাত মেলাচ্ছেন আসাদুজ্জামান আসাদের হাতে। বলছেন, খুব খুশি হয়েছি আপনার বিজয়ে। যাবার সময় মোবাইলে ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। এভাবে অভিনন্দন জানাতে আসা বেশিরভাগই গ্রামের একেবারে সাধারণ মানুষ। যারা আনুষ্ঠানিকতা বোঝে না। লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতায় নয় একেবারেই হৃদয়ের ভালোবাসা জানানো তাদের। শুভেচ্ছা জানাতে আসা অসংখ্য মানুষের মধ্যে বড় একটা অংশই পবা বা মোহনপুর এলাকার বাইরে থেকে আসা। জেলার গোদাগাড়ী, তানোর, রাজশাহী মহানগরী, বাগমারা, পুঠিয়া, দুর্গাপুর, চারঘাট, বাঘা উপজেলা, পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোরের নেতা কর্মীকেও দেখা যাচ্ছে তাকে শুভেচ্ছা জানাতে। আসাদকে অভিনন্দন জানাতে আসা বেশিরভাগই স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতা কর্মী। একেবারে তৃণমুলের নেতা কর্মী তারা। শুভেচ্ছা জানাতে আসা নেতা কর্মীরা বলছেন, আসাদুজ্জামান কোন নির্ধারিত উপজেলার নেতা নন, তিনি তৃণমুলের নেতা। তিনি যখন কোন পদে ছিলেন না তখনো তৃণমুলের হাজার হাজার নেতা কর্মী তার শুভাকাঙ্খি ছিলো। এখনো তারা শুভাকাঙ্খি।
তানোর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানী বলেন, আমি নিজেও সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী ছিলাম। ভোটের পরেই আমি গিয়ে ফুল দিয়েছি আসাদকে। রাব্বনিী বলেন, আসাদ ভাই তৃণমুল আওয়ামী লীগ থেকে উঠে আসা নেতা। ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং সবশেষ আওয়ামীলীগের জেলা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি তো গোটা জেলারই নেতা। সেই জন্য যারা পুরাতন নেতা, আসাদ ভাই বিজয়ী হওয়ায় সবাই প্রাণ ফিরে পেয়েছে। তিনি জনগণের, সাধরাণ মানুষের নেতা। এজন্যই সবাই তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। অভিনন্দন জানাচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ মামুন বলেন, আসাদ ভাই আজকের জাতীয় সংসদ সদস্য হয়েছে। পবা-মোহনপুরের মানুষ তাকে ভোট দিয়ে বরণ করে নিয়েছে এজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। আজকে পুরো রাজশাহীর সবখানেই আসাদের বিচরণ। তিনি তো ৮০ দশক থেকেই তিনি রাজনীতি করে আসছেন। আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ করা মানুষ তিনি। আজকের দিনে এসে তিনি আওয়মীলীগের পরিপূর্ণতা পেয়েছেন।
মামুন বলেন, বহু বছর ধরেই আসাদের কাছে রাজশাহীর মানুষ সেল্টার পেয়েছে। একটি বটগাছ যেভাবে ছায়া দেয় সেইভাবে তিনি ছায়া দিয়ে গেছেন। এই ছায়ায় আমরা সুন্দর ও শান্তিতে রাজনীতি করেছি। বাস্তবতা হলো তার আলোতেই আমরা রাজনীতি করেছি। আমাদের হারানোর কিছু নেই। আমরা একজন মানুষ পেয়েছি-আসাদ ভাই। আসাদ ভাই আছে মানে রাজশাহীর পুরো মানুষ উজ্জিবিত, আওয়ামী লীগ উজ্জিবিত। এই কারণেই মানুষ সবাই মিলে তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিচ্ছেন। পুরো রাজশাহীর তৃণমুল তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন।
রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক আহসানুল হক সম্পাদক মাসুদ বলেন, আসাদ ভাই জাতীয় সংসদ সদস্য হলেও আমরা মনে করি তিনি রাজশাহীর আপামর জনসাধারণের নেতা। রাজশাহী জেলার তৃণমুলের মানুষ যার কাছে দীর্ঘ সময় ধরে আশ্রয় পায় তার নামটাই হলো আসাদুজ্জামান আসাদ। তার কাছে রাজশাহীর বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ যাবে এটাই স্বাভাবিক। তৃণমুলের সাধারণ মানুষ আসাদ ভাইকে চিনে না এমন মানুষ রাজশাহী জেলাতে কম আছে। আসাদ ভাইয়ের কাছে রাজনীতির সেবা পেয়েছে এমন লোক রাজশাহী জেলার বাহিরেও আছে। সব খানেই মেডিকেল, আদালত সবখানেই আসাদকে পেয়েছে। এজন্য মানুষ আজকে তার কাছে ছুটে যাচ্ছে।
রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আখতারুজ্জামান আখতার বলেন, অসাদুজ্জামান আসাদ দীর্ঘদিন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামীগের নেতা ছিলেন। মূলত রাজশাহীর ৬টি আসনে যে সমস্ত প্রবীন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ আছেন, ত্যাগি নেতা কর্মী আছেন, বিভিন্ন সময় যারা সংসদ সদস্য দারা নিগৃহিত হয়েছেন আপমানিত হয়েছেন তাদের আশ্রয়স্থল ছিলো আসাদুজ্জামান আসাদ। সেই ক্ষেত্রে আসাদুজ্জামান আসাদ পবা-মোহনপুরের সংসদ সদস্য হলেও রাজশাহীর আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা তাকে নেতা মনে করে। তার কাছে যারা গেছেন তরা সমস্যার সমাধান পান, পাশপাশি সম্মান পান। শুধু পবা-মোহনপুর নয় রাজশাহীর প্রতিটি উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়াার্ড এমনকি প্রতিটি গ্রামের মানুষ মনে করে আসাদ আগামীতে পুরো রাজশাহীর নেতৃত্ব দেবেন তাই তার কাছে ফুল নিয়ে ছুটে আসছেন। আসাদ প্রতিটি মানুষের মোবাইল ধরেন। যদি ধরতে নাও পারতেন পরে কল ব্যাক করেন। এটি তিনি এমপি হবার পরও করেন। তিনি মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তাই তাকে সবাই ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। খালি হাতে গিয়েও কেউ কেউ অভিনন্দন জানাচ্ছেন।
দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র সাজেদুর রহমান মিঠু বলেন, তিনি রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি তৃণমুলের নেতা। সেই হিসেবে পুরো রাজশাহীতেই তার অবস্থান বিরাজমান । সেই সুবাদেই তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করছেন এবং ফুলের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। রাজশাহীতে যত নেতা আছেন সব চেয়ে ভালো নেতা আসাদ। তারা ভালোবাসার জন্যই মানুষ তারা কাছে যাচ্ছে এবং শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।
মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র সাইদুর রহমান বলেন, আসাদ ভাই তৃণমুলের নেতা। তিনি তো শুধু পবা-মোহনপুরের এমপি নন। রাজশাহী জেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ওয়ার্ডে তার শুভাকাঙ্খি আছে। আসাদ ভাই এমন এক নেতা যে, পুরো জেলাতে তার কর্মী আছে। তার লোক আছে। তিনি শুধু পবা-মোহনপুরের রাজনীতি করেন না।