রাজশাহীতে অধিকার’র মানববন্ধন
অবিলম্বে দেশের সকল গুমের শিকার ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দিতে হবে। একই সঙ্গে কথিত আয়নাঘর বা বন্দিশালার সঙ্গে জড়িত মানবাধিকার লঙ্ঘণকারীদের মানবতাবিরোধী অপরাধ আইনে বিচার করতে হবে। তাদেরকে কোন প্রকার দায় মুক্তি দেয়া যাবে না। ফ্যাসিবাদের রক্ষক বিদ্যমান সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। বিচার ব্যবস্থা ও নির্বাচন কাঠামো ঢেলে সাজাতে হবে। ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গুমের শিকার ব্যক্তিদের মুক্ত করা এবং গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ সকল মানবাধিকার লঙ্ঘণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার দাবিতে শনিবার দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’র আয়োজনে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। অধিকার’র রাজশাহীর ফোকাল পার্সন সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী মঈন উদ্দিন খানের পরিচালনায় মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) সহকারী মহাসচিব ড. সাদিকুল ইসলাম স্বপন, স্টুডেন্ট রাইটস এ্যাসেসিয়েশনের প্রতিষ্ঠা সাধারণ সম্পাদক ও মানবাধিকার কর্মী সাংবাদিক রাসেদ রাজন, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট রাইটস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মানবাধিকার কর্মী ফহিম রেজা, রাজশাহী কোর্টের আইনজীবি ও মানবাধিকার কর্মী এ্যাডভোটেক নিজাম উদ্দিন, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী ফয়সাল হোসেন, গুমের শিকার আব্দুল কুদ্দুসের সহধর্মীনি ও মানবাধিকার কর্মী সেলিনা বেগম, গুমের শিকার মুরশালিনের পুত্র শাগর, গুমের শিকার আব্দুল কুদ্দুশের বোন ও মানবাধিকার কর্মী পারভিননেছা, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক আবু হেনা মোস্তফা জামান, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক হাবিবুল্লাহ মোহাম্মদ কাউছার, মানবাধিকার কর্মী আনোয়ার হোসেন ফিরোজ প্রমূখ।
বক্তারা আরও বলেন, মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ গত দু’ যুগেরও বেশি সময় ধরে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ সকল মানবাধিকার লঙ্ঘণের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। যে কারণে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিবাদী সরকার অধিকারকে রুখে দিতে সব ধরণের বল প্রয়োগ করে। বিশেষ করে ঢাকার শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের ওপর বর্বর হামলার পর একমাত্র অধিকারই তথ্য প্রমাণসহ নিহতদের তালিকা প্রকাশ করে। তাতেই সরকার অধিকারের পরিচালক নাসির উদ্দিন এলান এবং সেক্রেটারী অ্যাডভোকেট আদিলুর রহমান খানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দু’ বছরের সাজা দেয়। এভাবে একের পর এক দমন-পীড়ন, গণতন্ত্র ও বিচার ব্যবস্থা দলীয়করণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘণের মাধ্যমে চরম সীমায় পৌঁছায়। যার ফলে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারকে হটিয়ে বাংলাদেশ নতুন করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা-ভাঙচুরের নিন্দা জানিয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ সাধারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তায় সতর্ক থাকার আহ্বানও জানানো হয় মানববন্ধন থেকে। মানববন্ধন শেষে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকদের পদত্যাদের দবিতে রাজশাহী কোর্ট চত্বরে অবস্থান নেয় মানবাধিকার কর্মীরা।