এক সময় বয়সভিত্তিক দলে নিয়মিত ছিলেন রাজিয়া খাতুন। বাফুফের ক্যাম্প থেকে বাদ পড়েছেন বছর চারেক আগে। এরপর ঘরোয়া লিগ খেলেছেন। নারী ফুটবলের সেই পরিচিত মুখ রাজিয়া আর নেই। প্রসবকালীন জটিলতায় আজ ভোরে পৃথিবী ছেড়েছেন তিনি। তার সতীর্থ ফুটবলার ও ফুটবলসংশ্লিষ্টরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফুটবলসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে, গতকাল (বুধবার) রাতে গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায় সন্তান প্রসব করেন রাজিয়া। সন্তান প্রসবের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় তার। সেই রক্তক্ষরণেই প্রাণ হারিয়েছেন। রাজিয়ার মৃত্যুতে দেশের ফুটবলে নেমে এসেছে গভীর শোক।
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন গোলাম রব্বানী ছোটন। তাই রাজিয়াকে খুব কাছ থেকেই চেনেন দেশের নামী এই কোচ। রাজিয়ার মৃত্যুর খবরে স্মৃতিচারণ করে ছোটন বলেন, ‘২০১৭ সালে থাইল্যান্ডে এএফসি অ-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের মূল পর্বে রাজিয়া খেলেছিল। পরের বছর সাফ অ-১৮ ভুটানের চ্যাম্পিয়ন দলেও ছিল। সিনিয়র দলে ক্যাম্পও করেছে কিছু দিন। পারফরম্যান্স অবনতির জন্য ২০১৯ সালের দিকে ক্যাম্প থেকে বাদ পড়ে।’
রাজিয়ার আকস্মিক মৃত্যুতে খুবই ব্যথিত জাতীয় দলের নিয়মিত মুখ সানজিদা আক্তার। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলতে এখন আছেন ভারতে। সেখান থেকেই ব্যথিত কণ্ঠে বলেন, ‘আমাদের ক্যারিয়ার একই সময়েই শুরু মূলত। ক্যাম্প থেকে বাদ পড়ার পর ও লিগ খেলেছে এবং পরবর্তীতে বিয়ে করেছে। বাচ্চা হওয়ার মুহূর্তে ও মারা গেছে শুনে খুবই খারাপ লাগছে। আমরা একজন বন্ধু হারালাম।’
বাংলাদেশের নারী ফুটবলের প্রেক্ষাপটে বাফুফের ক্যাম্প থেকে বাদ পড়ার পর আবার ফিরে আসা কঠিন। লিগ অনিয়মিত এবং এতদিন ফিটনেস ধরে রাখাও কষ্ট। ক্যাম্প থেকে বাদ পড়ার পরেও ফুটবলের সঙ্গে ছিল। এফসি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কাচারিপাড়া দুই দলে গত দুই লিগ খেলেছিলেন রাজিয়া। এফসি ব্রাহ্মণবাড়িয়া দলের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন জুবায়ের বলেন, ‘এক মৌসুম আগের লিগে আমাদের দলে খেলেছে রাজিয়া। সাতক্ষীরায় তার বাড়ি। আমাদের সাবেক খেলোয়াড়ের প্রসবকালীন মৃত্যুতে আমরা খুবই ব্যথিত। ’
২০০১ সালের ২৫ জানুয়ারি জন্ম নেওয়া রাজিয়া বাংলাদেশের নারী ফুটবলের উত্থানের শুরুর দিকের একজন। এএফসি অ-১৪ রিজিওনাল ( সেন্ট্রাল ও দক্ষিণ এশিয়া) চ্যাম্পিয়নশিপে ২০১৩ ও ১৫ সালে চ্যাম্পিয়ন দলে ছিলেন তিনি৷ এরপর অ-১৬ ও অ-১৯ দলেও খেলেছেন।