মুক্তি পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাষ্ট্রপতির আদেশে খালেদা জিয়াকে মুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, খালেদা জিয়া এখন চিকিৎসাধীন। তিনি এখনই বাসায় ফিরবেন কি না সেটা চিকিৎসকদের ওপর নির্ভর করছে। এদিকে সকালে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়ার বার্তা দেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ম্যাডাম সবাইকে প্রথম বলেছেন, সবাইকে শান্ত হতে বলো। এখানে এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি যেন না হয় যাতে অর্জিত বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে যায় কেউ। জনগণকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। এই বিজয় যেন কেউ ছিনিয়ে নিতে না পারে। খালেদা জিয়া কবে নাগাদ জনসমক্ষে আসবেন প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা জানেন, ম্যাডাম খুব অসুস্থ। আমি গতকাল রাতে দেখা করেছি… সুতরাং যখনই তিনি ফিট মনে করবেন, সুস্থ বোধ করবেন, তখন তিনি জনগণের সামনে উপস্থিত হবেন। বিভিন্ন সময়ে ৩৭টি মামলা দেওয়া হয়েছে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর নামে। ৩৫ মামলায় জামিন হলেও দুই মামলায় সাজা ভোগ করছেন গুরুতর অসুস্থ প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ। এর আগে গত সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জানান, কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজনৈতিক বন্দিকে শিগগির মুক্তি দেওয়া হবে। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান ও আহতদের সুচিকিৎসার প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার কথাও জানান রাষ্ট্রপতি। তিনি আরও বলেন, জরুরি ভিত্তিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। সব দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের লক্ষ্যে গতকাল রাতে বঙ্গভবনে সেনাপ্রধান, নৌপ্রধান, বিমান বাহিনীর প্রধান এবং দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতি। বৈঠকে কোটাবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করা হয়। এ সময় অনতিবিলম্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে সবাইকে ধৈর্য ও সহনশীল আচরণ করার আহ্বান জানানো হয় বৈঠকে। লুটতরাজ ও হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। সেই বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অনতিবিলম্বে মুক্তির সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এবং সম্প্রতি বিভিন্ন মামলায় আটক সব বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি যেন কোনোভাবেই বিনষ্ট না হয় সে ব্যাপারেও সভায় ঐকমত্য হয়।