নিজস্ব প্রতিবেদক
স্মার্ট নাগরিক হবে অসাম্প্রদায়িক, সাম্প্রদায়িক নাগরিক স্মার্ট হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বিভাগীয় সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
খলিল আহমদ বলেন, আমরা আমাদের সংস্কৃতির বিকাশ করতে চাই, অন্য সংস্কৃতির বিকাশ আমরা করতে চাই না। আমাদের যে সাংস্কৃতিক উপকরণগুলো আছে, সেগুলোর বিকাশ সাধন করাই আমাদের মূল লক্ষ্যÑ এর মাধ্যমে দেশকে দ্রুত সংস্কৃতিমনা করে গড়ে তুলতে চাই। প্রথমে আমরা সিলেটে বিভাগীয় সাংস্কৃতিক উৎসব করেছিলাম, এরপর দেশের প্রত্যেক বিভাগে এ ধরনের উৎসবে করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ইউনিয়ন পর্যায়ে সাংস্কৃতিক উৎসব করার নিদের্শ দিয়েছেন।
সংস্কৃতি উন্নত না হলে উন্নত জাতি হওয়া যায় না উল্লেখ করে সংস্কৃতি সচিব বলেন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্কৃতি উন্নত, সেখানে কেউ কাউকে অসম্মান করে না, একজন আরেক জনকে উৎসাহ দেয়। আমাদের সংস্কৃতিও এতটাই উন্নত হতে হবেÑ যেখানে কেউ আমাদেরকে অপমান করতে পারবে না, প্রত্যেকে প্রত্যেককে অনুপ্রেরণা জোগাবে, উৎসাহ দেবে।
সংস্কৃতিসচিব বলেন,বঙ্গবন্ধুর সংস্কৃতি ভাবনা কেমন ছিল?Ñ এটা আমাদের জানা দরকার। বঙ্গবন্ধু শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনকে বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানের নকশায় বাংলার বিভিন্ন সংস্কৃতির ছবি এঁকে দেয়ার ব্যবস্থা করতে বলেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শিল্পী আব্দুল আলীমকে কালো তালিকা থেকে মুক্ত করে বেশি বেতনের ব্যবস্থা করেছিলেন।
তিনি চিত্রশিল্পী সাহাবুদ্দিনকে পিকাসো হতে বলেছিলেন, তাঁকে জোর করে ফ্রান্সে পাঠিয়েছিলেনÑ এটাই ছিল বঙ্গবন্ধুর সংস্কৃতিভাবনা।
তিনি বলেন, আমরা সবাই এখন শুধু ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে চাইÑ এ ধরনের চিন্তা বাদ দেয়া দরকার। চিত্রশিল্পী সাহাবুদ্দিনের একটি শিল্পকর্মের মূল্য ৫০ লক্ষ টাকার বেশিÑ এ ধরনের কাজে এখন বেশ আয় করা যায়। তাছাড়া শিল্পের মাধ্যমে মানুষের মনের পরিবর্তন করা যায়, ধারনার পরিবর্তন করা যায়।
ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উপপুলিশ কমিশনার সরকার ওমর ফারুক, ডিআইজি’র প্রতিনিধি পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুস সালাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন ও আইসিটি) ড. মোঃ মোকছেদ আলী।
ংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠানে রাজশাহী, নওগাঁ, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনীতিক, বীরমুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানশেষে আট জেলার শিল্পীদেরঅংশগ্রহণে আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।