তবে এই তালিকা থেকে বাদ রয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়। এবার সেই নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন মেঘালয় এবং ত্রিপুরার সাবেক রাজ্যপাল বিজেপি নেতা তথাগত রায়। তিনি বলেছেন, ভারতে যাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে, তাদের শারীরিক পরীক্ষা করা উচিত। দেখা উচিত কোনো মুসলমানকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়ে যাচ্ছে না তো?
সোমবার (১৮ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইট) তথাগত রায় লিখেছেন, সিএএ থেকে মুসলিমরা সম্পূর্ণ বাদ। কিন্তু, কেউ তাদের পরিচয় জাল করে অমুসলিম হিসেবে ভারতে চলে চলে এসেছে, সে যে কারণেই হোক, ভয় পেয়ে হোক বা অন্য কোন কারণে। তাহলে তা বোঝ যাবে কী করে? অর্থাৎ যাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে তাদের প্রত্যেকের শারীরিক পরীক্ষা করা হোক।
এই নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূলের রাজ্যসভার সংসদ সদস্য তথা মতুয়া নেত্রী মমতা বালা ঠাকুর। এ দিন তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছেন, আমরা কোন সমাজে বাস করছি? একজন সাবেক রাজ্যপাল, যিনি শিক্ষিত সমাজের মানুষ; এই ধরনের কুরুচিকর মন্তব্যের টুইট কীভাবে করতে পারেন। আমরা অল ইন্ডিয়া মতুয়া সংগঠনের পশ্চিমবাংলা শাখার তরফে তার বিরুদ্ধে আইনি মামলা করব। কারণ ভারতবর্ষ হলো ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। কতটা লজ্জাজনক ঘটনা যে, আমাকে নাগরিকত্ব নিতে শারীরিক পরীক্ষা করতে হবে? এর থেকে লজ্জাজনক আর কিছু হয় না। একটা চক্রান্ত চলছে সাধারণ মানুষদের নিয়ে।
এ নিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেছেন, অত্যন্ত দায়িত্ব জ্ঞানহীন মন্তব্য করেছেন তথাগত। ধর্ম পরীক্ষার জন্য তিনি যে নিধান দিয়েছেন, এটা সভ্যতার সীমা লঙ্ঘন করেছে। এরা অশান্তিকে প্ররোচনা দিচ্ছে। মানুষে মানুষে ভাগ করছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। এরা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের লড়াই থেকে পিছিয়ে ধর্মের নামে ভেদাভেদের খেলায় মেতেছে।
তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞান, ধর্ম, সংস্কৃতি সব নিয়ে একটা সমাজ চলে। কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কুৎসিতভাবে ব্যবহার করা হয়, সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিবাদে নামবে।
মূলত পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে এবারে নির্বাচনের আগে সিএএ কার্যকর হয়েছে। গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, এই আইনের দ্বারা ৩৩ হাজার ৩১২ জন মানুষ উপকৃত হবেন।
মতুয়া পরিবারে আরও এক সদস্য শান্তনু ঠাকুর বিজেপির সংসদ সদস্য। তিনি ভারতের কেন্দ্রীয় বন্দর, নৌপরিবহন ও জলপথ প্রতিমন্ত্রী। তিনিও বলেছিলেন ভোটের আগে সিএএ হবে। আর হয়েছেও তাই। তবে তথাগত রায়ের বিষয়ে তার কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।