গত মঙ্গলবার বাংলাদেশি মালিকানাধীন জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ ছিনতাই করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। ওইদিন ভারত মহাসাগরে ২৩ বাংলাদেশি নাবিকসহ জাহাজটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় দস্যুরা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধের কারণে এডেন উপসাগর ও লোহিত সাগরে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের জাহাজ লক্ষ্য করে গত বছরের নভেম্বর থেকে হামলা চালানো শুরু করে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। এরপর আন্তর্জাতিক পরাশক্তিগুলো সব নজর দেয় ওই অঞ্চলে। এতে করে অন্যান্য সামুদ্রিক পথগুলো অনিরাপদ হয়ে ওঠে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়েই বাংলাদেশি জাহাজটি ছিনতাই করতে সমর্থ হয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। মানে হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধের বলির পাঁঠা হয়েছেন বাংলাদেশি ২৩ নাবিক ও বাংলাদেশি জাহাজটি।
২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ভারত সাগরে সোমালি দস্যুদের ব্যাপক উৎপাত ছিল। তখন নিরাপত্তা নিশ্চিতে ওই অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজসহ অন্যান্য শক্তি মোতায়েন করে আন্তর্জাতিক পরাশক্তিগুলো। কিন্তু হুথিদের হামলা শুরু হওয়ার পর সবকিছু ওইদিকে নিয়ে যাওয়া হয়।
সামুদ্রিক নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থা— হর্ন অব আফ্রিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দস্যুতাবিরোধী অপারেশন ইউনেভফোর-এর তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের নভেম্বর থেকে এডেন উপসাগর এবং সোমালি অববাহিকায় অন্তত ২০টি জাহাজে ছিনতাইয়ের চেষ্টা চলানো হয়েছে।
সামুদ্রিক নিরাপত্তাবিষয়ক ব্রিটিশ সংস্থা আমব্রে জানিয়েছে, সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু থেকে ১ হাজার ১১১ কিলোমিটার পূর্বে বাংলাদেশি জাহাজটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
আজ বৃহস্পতিবার জাহাজটি সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং বর্তমানে সেটি নোঙর করা অবস্থায় আছে। দস্যুরা প্রাথমিক অবস্থায় ৫০ লাখ ডলার মুক্তিপণ চেয়েছে বলে শোনা গেছে এবং মুক্তিপণ না দিলে নাবিকদের হত্যার হুমকি দিয়েছে।
ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার সময় এমভি আব্দুল্লাহ মোজাম্বিকের রাজধানী মাপুতো থেকে আরব আমিরাতে যাচ্ছিল। জাহাজটিতে ছিল ৫৫ হাজার টন কয়লা। জাহাজটি কবির স্টিল রি-রোলিং মিলসের মালিকানাধীন।