মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দাবি, ডিমের সংকট থাকায় দাম বেড়েছে। তাছাড়া জেলায় কোনো ফার্ম না থাকায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে হিমাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, রমজান মাসে ডিমের দাম কম থাকায়, তখন থেকেই মজুদ শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। পরে সুবিধা মতো আস্তে আস্তে বাজারে ছাড়েন ডিম।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মাদারীপুর হিমাগারে বর্তমানে প্রায় ছয় লাখ ডিম মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এক হালি ফার্মের ডিম পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকা। যা খুচরা পর্যায়ে পৌঁছে ৫৫-৬০ টাকায়। এছাড়া দেশি মুরগি ও হাঁসের ডিমের দেখা নেই বাজারে।
ক্রেতারা বলেন, হঠাৎ ডিমের দাম বাড়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে বিক্রেতারা বলেন, বাজারে ডিম নেই। ক্রেতারা এখন মহাবিপদে পড়েছে। মাছ-মাংসের দাম বেশি, এখন ডিমের দামও বেশি হলে না খেয়ে থাকতে হবে। এ ডিমের বাজারের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া উচিত। বড় বড় ব্যবসায়ীরা হিমাগারে ডিম মজুদ রেখেছেন। ক্রেতাদের সঙ্গে ডিমের দাম নিয়ে প্রতিনিয়তই ঝগড়া হচ্ছে। আমরা চাই ডিমের দাম স্বাভাবিক থাকুক।
খুচরা ব্যবসায়ী কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, চাহিদা মতো ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে ডিম পাওয়া খুবই কষ্ট, দুই থেকে তিনদিন পর পর এক গাড়ি ডিম আসে। তাতে ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না।
মৌসুমি ডিম ব্যবসায়ী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, মাদারীপুর জেলায় সেভাবে মুরগির ফার্ম নেই। এ ডিম অন্য জেলা থেকে কিনে আনতে হয়। সেক্ষেত্রে খরচ বেশি ও দামও বেশি পড়ে যায়। বর্তমানে ডিমের চাহিদা বেশি, সরবরাহ কম। তাই একটু দাম বেড়েছে। বাজারে পর্যাপ্ত ডিম পাওয়া গেলে এ সংকট থাকবে না।
মাদারীপুর কোল্ডস্টোরেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল করিম বলেন, দুই ব্যবসায়ীর প্রায় ছয় লাখ ডিম হিমাগারে মজুদ রয়েছে। তারা মার্চ মাস থেকে ডিম মজুদ রেখেছেন। সুবিধা মতো বাজারে ডিম আস্তে আস্তে ছাড়ছেন। ডিম তিন থেকে সাড়ে তিন মাস হিমাগারে ভালো থাকে। এর বেশি দিন হলে ডিম পচে যেতে পারে।
মাদারীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুবোদ কুমার দাস বলেন, মাদারীপুর জেলায় প্রতিদিন দেড় লাখ ডিমের চাহিদা রয়েছে। কখনও চাহিদা বাড়ে। গরমের সময় ডিম বেশি দিন হিমাগারে রাখা ঠিক নয়। এতে ডিমের গুনাগুণ নষ্ট হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফরের মাদারীপুরের সহকারি পরিচালক জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, মাদারীপুরে ডিম মজুদ করে রাখার অভিযোগের প্রমাণ পেলে ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা হবে। অবৈধভাবে মজুদ রেখে ডিমের দাম বাড়ানোটা অযৌক্তিক। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।