• ঢাকা, বাংলাদেশ রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
রাজশাহীর বাসচালক হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা নান্টুসহ গ্রেপ্তার দুই অভ্যন্তরীণ অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে গণমাধ্যম সংলাপ অনুষ্ঠিত গোদাগাড়ী স্কুলের এসএসসি ৯৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা রামেক ছাত্রদলের সভাপতি নূর, সম্পাদক রীমন রাজশাহীতে ইলেকট্রিক বাইক আনল রিভো বাংলাদেশ রংপুর বিভাগীয় সমিতির সভাপতি ডা. মতিউল, সম্পাদক সাংবাদিক সাজু রাজশাহীর নিউমার্কেটের আগুনে পোড়া ১২ দোকানীকে রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ ও বাপার সহায়তা রাজশাহীতে ৫ রত্নগর্ভা মাকে ও দুই সংগ্রামী নারীকে সম্মাননা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা, দেড় লাখ ছাড়ালো ভরি রাজশাহীতে নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ছেই, ৫৭ শতাংশই রাজশাহীর
নোটিশ
রাজশাহীতে আমরাই প্রথম পূর্ণঙ্গ ই-পেপারে। ভিজিট করুন epaper.rajshahisangbad.com

২৭ মে সারা দেশে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি অটোরিকশাচালকদের

রাজশাহী সংবাদ ডেস্ক
সর্বশেষ: সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

 ঢাকা মহানগরে ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, বিআরটিএ এবং ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রের ঘোষণার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে ‘রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ইজি বাইক সংগ্রাম পরিষদ’।

পাশাপাশি সমাবেশে থ্রি-হুইলার ও সমজাতীয় মোটরযান নীতিমালা চূড়ান্ত ও কার্যকর করে ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের দ্রুত নিবন্ধন, লাইসেন্স প্রদান ও রুট পারমিটসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।

দাবি আদায় না হলে আগামী ২৭ মে সারা দেশে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।সোমবার (২০ মে) সকাল সোয়া ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ করেন সংগঠনটির নেতারা।
এর আগে কয়েকশ অটোরিকশাচালক মিছিল নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন। এতে প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তার একপাশে যান চলাচল সীমিত হয়ে যায়।

সমাবেশে সংগঠনটির নেতারা বলেন, কেন এই সিদ্ধান্ত? কার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত? ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহন ঢাকা মহানগরের প্রধান সড়কে চলাচল করে না। এটা মূলত মহানগরে অলিগলিতে চলে। কারণ সেখানে কোনো গণপরিবহন নেই। এক জরিপে দেখা গেছে, ঢাকা মহানগরের প্রায় ৬০ ভাগ মানুষ এই ধরনের যানবাহনে চলাচল করে। আর মাত্র ৬ ভাগ যাত্রী নিয়ে ঢাকা মহানগরের প্রায় ৮০ ভাগ রাস্তা দখল করে যানজট সৃষ্টি করে প্রাইভেট গাড়ি। তারপরেও কেন এই বাহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা। এই বাহনের সঙ্গে চালক, মালিক, মহাজন, গ্যারেজ মালিক, চার্জিং ব্যবসায়ী, শ্রমিক মেস পরিচালনাকারী ও মোটররিকশা পার্টস, ব্যাটারিসহ সারা দেশে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ জড়িত। ঢাকা মহানগরে এ সংখ্যা আনুমানিক ৫ লাখের ওপরে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অটোরিকশাচালকদের বিক্ষোভ

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অটোরিকশাচালকদের বিক্ষোভ

তারা প্রশ্ন রাখেন, বিকল্প ব্যবস্থা না করে রাস্তা থেকে উচ্ছেদ করে এ গণপরিবহন বন্ধ করা হলে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহকারী লাখ লাখ মানুষের ও তাদের পরিবারের দায়দায়িত্ব কে নেবে?

সংগঠনটির নেতারা আরও বলেন, ২ টনের একটি এসিতে ৬ ঘণ্টায় ১৬ ইউনিট বিদ্যুৎ লাগে অথচ একটা ব্যাটারিচালিত যানবাহনের ব্যাটারি চার্জে ৪ ইউনিটের বেশি বিদ্যুৎ লাগে না। অর্থাৎ, ২ টনের এসিতে ১-২ জন মানুষের ঠান্ডা হওয়াটা জরুরি নাকি সমপরিমাণ বিদ্যুতে ৪ জন মানুষের আত্মকর্মসংস্থান ও ২০ জন মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষা, কোনটা জরুরি? আর অপচয়ের তো কোনো সুযোগই নেই বরং বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর ভাষায়, বিদ্যুৎ ব্যবহারে তাদের রিটার্ন বেশি। কারণ তাদের বিদ্যুৎ বিল আবাসিক বিল থেকে অনেক বেশি। এরা বিদ্যুৎ চুরিও করে না। দেশের প্রায় ৩৭ শতাংশ বিদ্যুৎ এমনিতেই ব্যবহারের অভাবে অলস পড়ে থাকে, যার জন্য সরকারকে ক্যাপাসিটি চার্জ গুনতে হয়।

তারা আরও বলেন, বিআরটিএ;র এক বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল এই যানবাহন বন্ধের কারণ হিসাবে বলা হয়েছে মোটর ভেহিকল অ্যাক্ট ২০১৮ অনুযায়ী এটি অনুমোদিত না। কিন্তু ইতোমধ্যে ইলেকট্রিক মোটরযান চলাচল সংক্রান্ত নীতিমালা পাস হয়েছে ও ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত থ্রি-হুইলার মোটরযান নীতিমালা চূড়ান্ত হওয়ার পথে। ব্যাটারিচালিত যানবাহন এই নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত। ফলে মোটর ভেহিকল অ্যাক্ট এখানে প্রযোজ্য নয়। আর নিরাপত্তাজনিত সমস্যার কথা বলা হয়েছে। এটাও একটি মিথ্যা কথা। নিরাপত্তাজনিত কি সমস্যা হয়েছে তার কোনো বিশ্বাসযোগ্য তথ্য উপাত্ত হাজির না করে লাখ লাখ মানুষের রুটি-রুজিতে হাত দেওয়ার অধিকার বিআরটএ’র নেই। এটি পরিবেশবান্ধব, শব্দ ও বায়ু দূষণ করে না, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী বাহন বলে এটা এখন দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। ফেব্রুয়ারি মাসে সংসদে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ বাহনের ইঞ্জিনের সক্ষমতা, সাশ্রয়ী, বিদ্যুতে রিটার্ন বেশি ও পরিবেশবান্ধব। তিনি এই বাহনকে বাংলার টেসলা বলে সম্বোধন করছেন। ইতোমধ্যে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট মহাসড়ক ছাড়া সর্বত্র চলাচলে আদেশ দিয়েছেন। আর তখন পরিবহন মন্ত্রী, বিআরটিএ ও দুই মেয়রের এই ঘোষণা কাউকে খুশি করতে বা কোন মহলকে আশ্বস্ত করতে করা হচ্ছে কিনা তাও অনুসন্ধান জরুরি।

সমাবেশে সংগঠনটির নেতারা সড়ক পরিবহন মন্ত্রী, বিআরটিএ ও ঢাকা মহানগরের দুই মেয়রের ঘোষণার পর মিরপুর, লালবাগ, গেন্ডারিয়া, শ্যামপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় রিকশা আটক, ব্যাটারি খুলে নেওয়া, ডাম্পিং ও চালক-মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের হয়রানির এবং মিরপুর এলাকায় আন্দোলনরত রিকশা শ্রমিকদের ওপর পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

পাশাপাশি বিকল্প ব্যবস্থা না করে মন্ত্রী, বিআরটিএ ও মেয়রের এই অযৌক্তিক, পরিবেশ বিরোধী, গণবিরোধী, ও লাখ লাখ মানুষকে কর্মহীন করে বেকারের মিছিল দীর্ঘ করার অগণতান্ত্রিক ও তুঘলকি সিদ্ধান্ত বাতিলের জোর দাবি জানান।

অন্যথায় এই লাখ লাখ কর্মহীন ও বেকার চালকসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে ২৭ মে সারা দেশের ৬৪ জেলায় তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ার দেন।

রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ইজি বাইক সংগ্রাম পরিষদের ঢাকা মহানগর শাখার সহ-সভাপতি জালাল আহমেদের সভাপতিত্বে ও অর্থ সম্পাদক রোখশানা আফরোজ আশার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের আহ্বায়ক ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, অর্থ সম্পাদক জুলফিকার আলী, সংগ্রাম পরিষদ কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ সদস্য আবু নাঈম খান বিপ্লব, রাহাত আহমেদ, এস এম কাদির, ঢাকা মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক দাউদ আলী মামুন, সদস্য সেকান্দার আলী, আবদুস সালাম।


আরো খবর