• ঢাকা, বাংলাদেশ শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৯:১৩ পূর্বাহ্ন

নওগাঁয় রেজিষ্ট্রেশন ও প্রশিক্ষণ বিহীন শিক্ষক দিয়ে চলছে কেজি স্কুলগুলো 

নওগাঁ প্রতিনিধি
সর্বশেষ: বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪

দেশের অন্যান্য এলাকার মতো নওগাঁর বিভিন্ন স্থানে তৈরি হয়েছে কেজি স্কুল। কিন্তু এই স্কুল গুলো চলছে রেজিষ্ট্রেশন বিহীন ও প্রশিক্ষণ বিহীন শিক্ষক দিয়ে। রেজিষ্ট্রেশনবিহীন ভাবে চলায় এলাকায় ভেদে দেখা যায় শিক্ষার্থী বেতন অনেক কম বেশি। এছাড়াও প্রশিক্ষণ ছাড়া শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করানোয় প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে নতুন কারিকুলাম। তাই এলাকার শিক্ষানুরাগীদের দাবি নির্দিষ্ট নীতিমালা ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক দিয়ে চালানো হোক এসব প্রতিষ্ঠান। এতে করে নতুন কারিকুলাম সঠিকভাবে বাস্তবায়নের সাথে উপকৃত হবে অভিভাবকগণ।
বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিবন্ধন বিধিমালা-২০২৩ অনুসারে একটি কেজি স্কুলের প্রধান প্রথমে পাঠদান অনুমতির জন্য আবেদন করবেন। এ ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাই অন্তে ওই প্রতিষ্ঠান প্রথমে এক বছরের জন্য পাঠদানের অনুমতি পাবে পরবর্তীতে সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩০ দিন পূর্বেই রেজিষ্ট্রেশনের জন্য আবেদন করবেন। যদি এই সময়ের মধ্যে আবেদন না করে তাহলে পাঠদান অনুমতি বাতিল হয়ে যাবে। কোন প্রতিষ্ঠান রেজিষ্ট্রেশন পাওয়ার পর এর মেয়াদ হবে ৫ বছর। এই বিধিমালায় আরও বলা হয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো ম্যানেজিং কমিটি থাকতে হবে এবং তাদের সাথে পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে হবে। কিন্তু এই নীতিমালার কোন তোয়াক্কা না করেই এইসব স্কুল গুলো।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ জেলার ১১টি উপজেলায় মোট ৪০৭ টি কেজি স্কুল রয়েছে। এ স্কুল গুলোর অধিকাংশে প্লে শ্রেণি থেকে অষ্টম বা দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করানো হয়। দেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ে চালু হয়েছে নতুন কারিকুলাম। এইসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নতুন কারিকুলামের প্রশিক্ষণ না থাকায় তারা অনেকটা পূর্বের নিয়মে গতানুগতিক ভাবে পাঠদান করিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে অনেকাংশেই মুখস্থ বিদ্যার মধ্যেই রয়েছে। এতে করে যেমন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকায় রয়েছেন এসব প্রতিষ্ঠানের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা।
এবিষয়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী অভিভাবকদের সাথে কথা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকারি স্কুলের চেয়ে সচারাচর প্রাইভেট স্কুলগুলোতে লেখাপড়া ভালো হয়। এখানে আমাদের সন্তানেরা সরকারি স্কুলের চেয়ে কিছুটা হলেও বেশি শেখে। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই সন্তানদের প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করিয়ে দিয়েছি। যদি সরকারি ভাবে স্কুলগুলোর বেতন নির্ধারণ করে দিতো তাহলে আমাদের জন্য আরও ভালো হতো।
এবিষয়ে জানতে চাইলে মহাদেবপুর উপজেলা চকগৌরী বাজারে অবস্থিত রংধুনু বেসরকারি প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালক মো. আজাদুল ইসলাম, পাহাড়পুর আল হেরা মডেল অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষ মো. মোয়াজ্জেম হোসেনসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও প্রতিষ্ঠান প্রধান বলেন, আমরাও চাই সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী রেজিষ্ট্রেশন নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাতে এবং নতুন কারিকুলামের প্রশিক্ষণ পেতে। প্রশিক্ষণ নিয়ে সঠিক ভাবে শ্রেণিতে পাঠদান করাতে। বিভিন্ন সময় আমাদেরকে প্রতিষ্ঠানের রেজিষ্ট্রেশনের কথা বলা হলেও পরবর্তীতে কোন এক অজানা কারণে তা বাস্তবায়ন হয় না। কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানায় আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর রেজিষ্ট্রেশন করা ব্যবস্থা করে দেবেন এবং সেইসাথে জোর দাবি জানায় প্রতিটি শিক্ষককে প্রশিক্ষণের আওতায় এনে নতুন কারিকুলামের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
জানতে চাইলে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ছানাউল হাবিব বলেন, প্রাথমিক অনুমোদনের জন্য পুরো জেলা থেকে এ পর্যন্ত ২ টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে তা অনুমোদনের দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই প্রতিটি স্কুল সরকারি নীতিমালার আওতায় আসুক। তবে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে তিনি বলেন, যদি শিক্ষকরা স্ব-উদ্যোগে প্রশিক্ষণ নিতে চায় তাহলে আমরা তার ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।


আরো খবর