• ঢাকা, বাংলাদেশ সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬:২৫ পূর্বাহ্ন

রাজশাহীকে অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করা হবে : লিটন

রিপোর্টার নাম:
সর্বশেষ: বুধবার, ১৪ জুন, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজশাহী মহানগরীর ১৪ ও ১৫নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত ও ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই দুটি ওয়ার্ডে গণসংযোগ ও পথসভা করেন তিনি। প্রথমে দড়িখরবনা রেললাইন সংলগ্ন মাঠে আয়োজিত পথসভায় বক্তব্য দেন মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এরপর নগরীর শালবাগান, উপশহর নিউমাকের্ট ও ডবতলার মোড়ে পথসভায় বক্তব্য রাখেন। এ সময় পথসভাগুলোতে মানুষের ঢল নামে। পথসভায় বক্তৃতায় রাজশাহীর উন্নয়ন  চলমান রাখতে ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার অনুরোধ জানান মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

পথসভায় মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, পথসভায় পুরুষদের চেয়ে নারীদের উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করছি। নারীদের এই জাগরণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান। তিনি চেয়েছেন নারীরা ঘরেই বাইরে এসে বিভিন্ন কাজ করুক, তাই হয়েছে।  সন্তানের নামের পাশে বাবার নামের পাশাপাশি এখন মায়ের নামও লেখা হয়। নারীদের এই মর্যাদা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি দেশের মানুষের কল্যানে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কেউ কি ভেবেছিল আমরা নিজদের অর্থে পদ্মা সেতু করতে পারবো? সেটি করে দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যে পদ্মাসেতু নিয়ে বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘পদ্মাসেতুকে কেউ উঠবেন না, সেতু ভেঙ্গে যাবে।’ সেই পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে পার হয়ে বিভিন্ন জেলায় গিয়ে জনসভা করেন বিএনপির নেতারা।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খায়রুজ্জামান  লিটন বলেন, বিএনপিকে বারবার অনুরোধ করার পরও তারা নির্বাচনে আসেনি। নির্বাচনের মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ছিল, তারাও বরিশালের একটি ঘটনার অজুহাত দেখিয়ে নির্বাচন বর্জন করেছে। তারা বরিশালে ভেবেছিল বিএনপি-জামায়াতের ভোট পেয়ে এবং আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্বের কারণে জয়ী হবে। কিন্তু তারা জানতো না যে, কঠিন সময়ে আওয়ামী লীগ এক হয়ে যায়। বরিশালে বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগের বিয়ঝ হয়েছে। তাই মুখ রক্ষার জন্য এখন তারা নির্বাচন বর্জন করেছে। তারা নির্বাচন বর্জন করলেও তাদের মার্কাটা কিন্তু ইভিএমে থেকে যাবে। সেখানে তাদের সর্মথকরাও ভোট দেবে। এতে আমাদের কিছু যায় আসে না।

সাবেক রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহী অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া জনপদ ছিল। ২০১৯ সালে রাজশাহীর উন্নয়নে ২৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই অর্থে যখন কাজ শুরু করবো, তখন করোনা মহামারি সংক্রমণ দেখা হয়। তখন আমরা মানুষের জীবন বাঁচাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। করোনার সময়ে নগরবাসীকে সময় দফায় দফায় খাদ্য ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। বিনামূল্যে অক্সিজেন, ওষুধ সহ সকল সেবা দেওয়া হয়। করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নির্মাণ সামগ্রী ও ডলার দাম বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে আড়াই বছর তেমন উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব হয়নি। ২৭০০ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ১২০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করতে পেরেছি। আরো ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। আমি নির্বাচিত হলে এর সঙ্গে আরো ৩ হাজার কোটি টাকার অর্থ বরাদ্দ আনতে চাই। আগামীতে রাজশাহীতে ৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন করতে চাই।

 

সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহীতে ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। এবার দরকার কর্মসংস্থান। যদি মেয়র নির্বাচিত হতে পারি তবে এবার শিল্পায়নের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। রাজশাহীতে অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করা হবে। ভারতের মুর্শিবাদের ধুলিয়ান থেকে গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ হয়ে আরিচা পর্যন্ত নৌরুট চালু করতে চাই। এটি চালু হলে ভারত থেকে পাথর, ফ্লাই অ্যাশ সহ প্রয়োজনী পণ্য আনা যাবে। রাজশাহীতে উৎপাদিত পণ্য রপ্তানী করা যাবে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও অনেক কর্মসংস্থান হবে।

তিনি আরো বলেন, রাজশাহী সিটির আয়তন প্রায় চারগুন বৃদ্ধি করা হবে। বর্তমান ৯৬ বর্গকিমি থেকে ৩৫০ বর্গকিমিতে সম্প্রসারণ করা হবে। আমাদের শহরে পাশে এলাকার মানুষেরা উন্নত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকবে, এটি উচিত হবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গত নির্বাচনে স্লোগান ছিল ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’। সেই স্লোগানকে ধারণ করে সম্প্রসারিত এলাকায় রাস্তা, ড্রেন নির্মাণ সহ উন্নত নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, সারা শহরে দশটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলা হবে। সেখানে বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। প্রশিক্ষণ নিয়ে তরুণ-তরুণীরা ঘরে বসে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে অর্থ উপার্জন করতে পারবে। সেই কাজের ক্ষেত্রও আমরা দেখিয়ে দেবো।

তিনি আরো বলেন, রাজশাহী থেকে অনেক মানুষ চিকিৎসার জন্য ভারতের কলকাতা সহ বিভিন্ন শহরে যান। সরাসরি বাস ও ট্রেন না থাকায় যাতায়াতে অনেক কষ্ট হয়। আগামীতে আমি নির্বাচিত হলে ছয় মাসের মধ্যে রাজশাহী-কলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন ও বাস চালু করতে চাই।

২১ জুন সকাল সকাল ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহীতে অনেক গরম। তাই সকাল সকাল ভোট কেন্দ্রে যেতে হবে। ভোটকেন্দ্রে আমাদের লোক, পোলিং এজেন্ট, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকবে। সকাল সকাল ভোটকেন্দ্রে গিয়ে মাথা উঁচু করে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। রাজশাহীর উন্নয়নের স্বার্থে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে জয়যুক্ত করার অনুরোধ জানাই।

পথসভায় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ইয়াসমিন রেজা ফেন্সি, জাসদ রাজশাহী মহানগরের সভাপতি আবদুল্লাহ-আল-মাসুদ শিবলী, রাজশাহী মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামাণিক দেবু, মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম, বোয়ালিয়া থানা (পশ্চিম) আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান রতন, রাজশাহী মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সহ সর্বস্তরের জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।


আরো খবর