• ঢাকা, বাংলাদেশ মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০১:৫৬ অপরাহ্ন

রাজশাহী আইএইচটিতে শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারপিট, হাসপাতালে ভর্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
সর্বশেষ: সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারপিট করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা তাকে মারপিট করেছে। তারা শাখা ছাত্রলীগ সভাপতির অনুসারী। সোমবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে আইএইচটি ক্যাম্পাসের গ্যালারী রুমে এ মারধরের ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম হাসান আলী। তিনি আইএইচটির প্রথম বর্ষের ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি নাটোর সদর উপজেলায়। বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৪নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। আইএইচটির অন্তত ১০/১৫ জন মিলে তাকে পেটাই। মারপিটকারীরা আইএইচটির শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী।
ঘটনার ব্যাপারে হাসান আলী বলেন, ফ্রেন্ডরাসহ আমি গ্যালারী রুমে বসে ছিলাম। একটা ছেলে এসে বললো বাহিরে তোমাদের সিনিয়র ভাই ডাকতেছে। আমি ক্লাস শেষ করে যেতে চেয়েছিলাম, মিনিট দু-চারেক পর ৮/১০ জন দলবেঁধে এসে বলতেছে, বাহিরে চলো। আমি বললাম, ক্লাস শুরু হবে, এখন সম্ভব না। তখন বলছে, ৫ মিনিটের জন্য হলেও চলো। আমি বললাম, সম্ভব না। পরে গ্যালারীর সামনের ফাঁকা জায়গায় কথা বলার জন্য বললাম। যেই আমি বের হয়েছি আমার কলার ধরে সবাই মার শুরু করেছে। পুরো গ্যালারীর সামনেই আমাকে মারছে, সবাই দেখছে। পরে আমার বন্ধুরা এসে মেডিকেলে নিয়ে এসেছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের কলেজের ছাত্রলীগের সভাপতি আকাশ ভাই হোস্টেলের জন্য আমার থেকে ১৬ হাজার টাকা নিয়েছিল। দুই মাস আগের ঘটনা। কিন্তু আমাকে কোনো রশিদ দেয় নি। পরে আমি বলছিলাম, হয় রশিদ দেন না হয় টাকা ফেরত দেন। কিন্তু টালবাহানা শুরু করেছে। এর জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি দাবি করেন।
তবে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটে নি বলে দাবি করেছেন আইএইচটি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন আকাশ। তিনি বলেন, এটা বড় কোনো মারামারির মতো বিষয় না। কলেজে যেহেতু পরীক্ষা চলছিল তাই পুলিশ এবং র‌্যাব অবস্থান করছিল। কলেজের শিক্ষার্থী না হলে কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না, র‌্যাব-পুলিশ আটকিয়ে দেয়। কলেজ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আমরা কথা বলেছি, কলেজ প্রশাসনকেও জানিয়েছি দ্রুতই একটা সমাধান করে দিবো। এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা।
তিনি বলেন, হোস্টেলে সিট দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়া এটা অযৌক্তিক এবং ভুয়া একটা কথা। যে এ কথা বলেছে তাকে নিয়ে আমার কাছে আসেন, আমি জিনিসটা প্রমাণ করে দিচ্ছি।
আহত হাসানের ১৬ হাজার টাকা প্রদানের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমাকে কেন টাকা দিবে? আমার জানা মতে আমি কখনো কারো থেকে টাকা নেই নি। যারা অভিযোগ করেছে তাদের নিয়ে এসে বসে সম্মুখ সমাধান করতে হবে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কেউ যদি মিথ্যা অপপ্রচার চালায় সেটা নিয়ে তো ব্যক্তিগত মতামত নেই।
জানতে চাইলে আইএইচটি অধ্যক্ষ ডা. ফারহানা হক বলেন, বিষয়টা আপনাদের কাছ থেকেই জানতেছি, আমি এখনও পর্যন্ত ওটা অফিসিয়ালি জানি নাই। ওটা সম্ভবত প্রতিষ্ঠানের বাহিরের কোনো ইস্যু নিয়ে। আমি কালকে (মঙ্গলবার) হয়তো বিষয়টা সম্পর্কে জানতে পারবো।
আহত হাসানের অভিযোগের ব্যাপারে অধ্যক্ষ বলেন, কেন সে আকাশকে টাকা দিয়েছে? আকাশের তো সেই এখতিয়ার নাই। পার্সোনালি যদি কেউ কিছু করে থাকে সেটার দায়ভার তো আমরা নিবো না। কেউই আমাদের সাথে যোগাযোগ করে নাই, যে ভুক্তভোগী সেও আমাদের কিছু বলে নাই। আমাদের অফিসিয়ালি না জানিয়ে আপনাদের (সাংবাদিক) জানালে তো হবে না।


আরো খবর