• ঢাকা, বাংলাদেশ শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০১:২০ অপরাহ্ন

রাসিক নির্বাচনে অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা: সিইসি

রিপোর্টার নাম:
সর্বশেষ: বুধবার, ৭ জুন, ২০২৩

নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের আলোচনায় চাপ অনুভব করছি না

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ইভিএম নিয়ে এখনো কারো কোন সংশয় থাকলে আদালতে যান। এই বিষয়ে আর কথা শুনতে চাইনা। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে না। এটি একটি স্বাধীন সংস্থা। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সিইসি বলেন, বিদেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের চাপ আসছে বলে পেপার পত্রিকায় দেখা যাচ্ছে। এগুলো নিয়ে আমরা কোন রকম চাপ অনুভব করছি না। সেই বিষয়গুলো আমরা গায়ে মাখছি না।
বুধবার সকালে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থীরা উপস্থিত হয়ে তাদের বিভিন্ন অভিযোগ, সংশয়ের কথা তুলে ধরেন। প্রতিপক্ষ প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণ বিধি লঙ্ঘনেরও অভিযোগ করেন অনেক প্রার্থীই। সংশয় জানান ইভিএম নিয়েও।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল তার বক্তব্যে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেন আচরণ বিধি মেনে চলার উপর। জেলা প্রশাসন, নির্বাচন কমিশনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের মাধ্যমে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরীর আহবান জানান। আচরণ বিধি লংঘন রোধে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার জন্যও সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা দেন তিনি।
তিনি বলেন, নির্বাচনী আচরন বিধিমালা প্রার্থীদের মেনে চলতে হবে। কারো বিরুদ্ধে গুরুতর আচরণবিধি ভঙ্গ করার প্রমান পেলে প্রার্থীতা বাতিল করতে বিন্দুমাত্র দেরি করবো না।
ইভিএম প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ইভিএমটা পাস্ট এন্ড ক্লোজ চ্যাপ্টার। অসংখ্য নির্বাচন হয়েছে ইভিএম এ । ইভিএম এ তারপরও যদি সন্দেহ, সংশয় থাকে তাহলে বিষয়টা আদালতে নিয়ে যান। আমাদের কাছে এই জিনিসটা আর করবেন না। কারণ আমরা এই বিষয়ে আর শুনতে চাই না। আমরা এর ভিতরে কোন অনিয়ম, ম্যানিপুলেশান, ভুত পেত্নি বা কোন কিছুই দেখতে পাইনি এই পর্যন্ত। সাতশ আসনে নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে যদি আমরা ভুত বা পেত্নি দেখতে পেতাম তাহলে আমরাও অবশ্যই ব্যবস্থা নিতাম। আমরা অসত নই। আমরাও সততায় বিশ^াস করি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচন কমিশন কিন্তু কারো প্রতিনিধিত্ব করেনা। সরকারী প্রতিনিধিত্ব করে না। আমরা নিরোপেক্ষ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। সরকার নির্বাচিত হয়, আপনারা যারা স্থানীয় সরকারে আছেন আপনারাও নির্বাচিত হবেন। আমরা কোন সরকারের প্রতিনিধি নই। আমরা একটি স্বাধীন সাংবিধানিক সংস্থা। আমাদের উপর যে দায়িত্ব আরোপিত হয়েছে আমরা নিরোপেক্ষ থেকে নির্বাচক মন্ডলী যারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে যাতে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারে সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্বই আমাদের জন্য প্রধান।
গণতন্ত্রের কথা যদি বলেন, নির্বাচনের যদি কথা বলেন। আমরা সবসময় অংশগ্রহণমুলক, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে বিশ^াস করি। গণতন্ত্রকে যদি বিকশিত করতে হয়, গণতন্ত্রকে যদি চর্চা করতে হয় এবং গণতন্ত্রকে যদি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হয় তাহলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে একসময় একটা সুস্থ ধারা দাঁড়িয়ে যাবে।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার উৎকণ্ঠা আমার প্রত্যাশা একটাই. ভোটের দিন ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে আসবেন, নির্ভয়ে আসবেন, বির্বিঘ্নে আসবেন, তারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন সেখানে কেউ বাধা প্রদান করতে পারবেন না। সেখানে যদি কোন অনিয়ম হয় আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের তৎপরতায় কোন চাপ অনুভব করছে না নির্বাচন কমিশন। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে আইন এবং সংবিধান অনুযায়ি নির্বাচনগুলো এগিয়ে নেয়া। আমরা সেই কাজ করছি। এগুলো যদি কোন বিষয় হয়ে থাকে সরকারের জন্য বিষয় হতে পারে, আমাদের জন্য নয়।
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরউল্লাহ্র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) মোঃ আহসান হাবিব খান, নির্বাচন কমিশনের সচিব জাহাংগীর আলম, রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি আব্দুল বাতেন, মহানগর পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান, রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন। মতবিনিময় সভায় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


আরো খবর